Breaking







Saturday, 22 May 2021

দিল্লির সুলতানি শাসনে উপর বিস্তারিত আলোচনা পর্ব ১/Detailed discussion on the Sultanate of Delhi Part 1.




প্রিয় বন্ধুরা

        আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় দিল্লি সুলতানি শাসনের উপরে যে সমস্ত শাসকরা সাম্রাজ্য চালিয়ে গিয়েছিল তাদের উপরে বিস্তারিত আলোচনা। আমরা এই চ্যাপ্টার এর উপর থেকে প্রতিযোগিতা পরীক্ষায় প্রতিনিয়ত প্রশ্ন আছে দেখি। তাই এই অধ্যায়ের সমস্ত করব আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।


✍️  দিল্লী সুলতানী শাসন (1206 -1526 খ্রীষ্টাব্দ)

         পৃথ্বীরাজ চৌহান দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে (1192 খ্রীঃ) সাহাবুদ্দিন মহম্মদ, ঘােরীর নিকট পরাজিত হওয়ার পর, ভারত ইতিহাসে মুসলিম যুগ শুরু হয়। তবে মহম্মদ ঘােরীর হঠাৎ প্রয়াণের পর 1206 খ্রীষ্টাব্দে তার তিন ক্রীতদাস তাজউদ্দিন ইলদুজ, নাসিরুদ্দিন কুবাচা এবং কুতুবদ্দিন আইবকের মধ্যে ভারতের উত্তরাধিকার প্রাপ্তি নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। 1206 খ্রীষ্টাব্দ থেকে 1526 খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত সময় সুলতানী শাসন নামে পরিচিত। এই সময়ের মধ্যে 5টি বংশ।


✓ দাস বংশ (1206-1290 খ্রীষ্টাব্দ)

• মহম্মদ ঘােরীর মৃত্যুর পর, যে মুসলিম শাসকগণ 1206 খ্রীঃ থেকে 1290 খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ভারতে শাসন করেন তারা ছিলেন। ক্রীতদাস। পরবর্তী সময়ে সুলতানের অনুগ্রহ পেয়েছেন নতুবা সুলতানের সন্তানসন্ততি। সুতরাং এই বংশ দাসবংশ হিসাবে পরিচিত।

• দাস বংশ (মামলুক বংশ) প্রধানতঃ তিনটি ছােট ছােট বংশে বিভক্ত ছিল

• কুতুবি বংশ (1206-1211) কুতুবউদ্দিন আইবক

• প্রথম ইলবারি বংশ (1211-1246) ইলতুৎমিস 

• দ্বিতীয় ইলবারি বংশ (1246-1290)বলবন


✓ কুতুবউদ্দীন আইবক (1206-1210 খ্রীষ্টাব্দ)

• মহম্মদ ঘােরী কুতুবউদ্দীন আইবককে দাস হিসাবে ক্রয় করেন। কিন্তু কুতুবুদ্দীন আইবক নিজ কর্মক্ষমতা ও যােগ্যতার দ্বারা মহম্মদ ঘােরীর সেনাপতি হন। মহম্মদ ঘােরীর মৃত্যুর পর কুতুবদ্দীন আইবক নিজেকে স্বাধীন ঘােষণা করেন এবং দিল্লীর ইন্দ্রপ্রস্থে নিজ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

• সুলতান উপাধি ধারণ করেন এবং লাহােরে নিজের রাজধানী স্থাপন করেন।

• কুতুবৰ্দীন আইবক, ঘােরী সাম্রাজ্যের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেন, এবং দাস বংশের প্রতিষ্ঠাতা।

• তিনি প্রচুর দানধ্যান করতেন, মুসলমান লেখকদের । লক্ষ কয়েন দান করেন, তাই তার নাম হয় লাখ বকস বা লক্ষ দাতা।

• হাসান উস নিজামির তিনি পৃষ্ঠপােষক ছিলেন। সুফি সন্ত খাজা কুতুবদ্দীন আইবকের নামে বিখ্যাত কুতুব মিনার নির্মাণ শুরু করেন। এর কাজ শেষ করেন ইলতুৎমিস।

• চৌগান খেলতে গিয়ে তিনি মারা যান 121) খ্রীষ্টাব্দে।

• তিনি কোয়াত-উল ইসলাম মসজিদ তৈরী করেন দিল্লীতে ও আজমেরে তৈরী করেন আড়াই দিন কা ঝােপড়া।


✓ আরাম শাহ (1210 খ্রীষ্টাব্দ) :

• কুতুবউদ্দীন আইবকের মৃত্যুর পর তার পুত্র আরাম শাহ সিংহাসনে বসেন।

• তিনি অকর্মণ্য ছিলেন।

• কুতুবউদ্দীন আইবকের জামাতা এবং বাউনের শাসনকর্তা, ইলতুৎমিস সিংহাসনে বসেন।

• ইলতুৎমিস আরামশাহকে পদচ্যুত করে সিংহাসনে বসেন।


✓ শামসুদ্দিন ইলতুৎমিস (121-1236 খ্রীষ্টাব্দ) :

• দাস বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক এবং তিনিই ছিলেন দাস বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা।

• তিনি ইলবারী তুর্কী ছিলেন, তাই তার রাজবংশের নাম ছিল ইলবারী তুর্কী বংশ।

• 1211 সালে আরাম শাহ; ইলতুৎমিসের দ্বারা পরাজিত হন এবং সিংহাসনে বসেন।

• রাজধানী লাহাের থেকে দিল্লীতে স্থানান্তরিত করেন। কুতুব মিনারের নির্মাণ সম্পন্ন করেন এবং আজমের শরীফ মসজিদ নির্মাণ করেন।

• ইলতুৎমিস রুপাে দ্বারা তৈরী মুদ্রা টঙ্কা (175 gm) এবং তামা দ্বারা তৈরী মুদ্রা জিতল-এর প্রচলন করেন।

• ইকতাপ্রথার প্রবর্তন করেন। তিনি একটি কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনীর পত্তন করেছিলেন।

• তিনি চল্লিশ জন অভিজাত তুর্কীদের নিয়ে চল্লিশ চক্র বা বন্দেগান ই চাহেলগানীর তৈরী করেন।

• ইলতুৎমিসের রাজত্বকালে (1221 খ্রীঃ) দুর্ধর্ষ মােঙ্গল নায়ক চেঙ্গিজ খাঁ মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার নানা রাজ্য জয় করে। খিরা বা খােয়ারিজম রাজ্য আক্রমণ করেন। খিরার অধিপতি জালালউদ্দিন মঙ্গরবানি প্রাণভয়ে পাঞ্জাবে উপস্থিত হন ও ইলতুৎমিসের আশ্রয় প্রার্থনা করেন। কিন্তু ইলত্যুৎমিস তাকে সাহায্য করেননি, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ইলতুৎমিস উপলব্ধি করেন যে, জালালউদ্দিনকে আশ্রয় দেওয়ার অর্থই হল দুর্ধর্ষ চেঙ্গিজ খাঁর আক্রমণের সম্মুখীন হওয়া। এর থেকে তাঁর রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিতার পরিচয় পাওয়া যায়।

• অবাকই নাসিরির লেখক মিনহাতা উস সিরাজ তার সমসাময়িক ছিলেন।

• 1229 খ্রীষ্টাব্দে খলিফা তাকে একটি ফরমান’ পাঠান এবং ‘সুলতান ই আজম’ বা প্রধান সুলতান উপাধিতে ভূষিত করেন।

• ইলতুৎমিস ছিলেন মধ্যযুগীয় দিল্লী নগরীর প্রকৃত স্থপতি। তিনি দিল্লী নগরীকে সুউচ্চমিনার, মসজিদ, মাদ্রাসা, খাকা, অট্টালিকা ও সুবিশাল জলাশয় দ্বারা সুসজ্জিত করেন। তিনি তাই সুউচ্চ মিনারের জনক’ নামে পরিচিত।


✓ রুকণউদ্দিন ফিরােজ (1236 খ্রঃ) :

• ইলতুৎমিস-এর জ্যেষ্ঠ পুত্র রুকনউদ্দিন ছিলেন উচ্ছঙ্খল, অপদার্থ ও বিলাসপ্রিয়। তিনি রাজকার্যে অবহেলা করলে বিধবানতাে শাহ তুর্কান সকল ক্ষমতা করায়ত্ত করেন।

• রুকনউদ্দীন ও তার মাতার অত্যাচারে ক্ষুব্ধ দিল্লীর জনসাধারণ ও সামরিক বাহিনীর সমর্থন নিয়ে সুলতান রাজিয়া সিংহাসনে বসেন।


✓ রাজিয়া সুলতান (1236-1240 খ্রীঃ) :

• তিনি ছিলেন মধ্যযুগে ভারতের প্রথম ও শেষ মহিলা শাসক।

• তিনি অবগুণ্ঠন ত্যাগ করে পুরুষের পােষাকে সজ্জিত হয়ে প্রকাশ্য দরবারে উপস্থিত হতেন।

• এতদিন পর্যাপ্ত সকল উচ্চপদে ও রাজপদে তুর্কিদের একচেটিয়া অধিপত্য ছিল। রাজিয়া সরকারি পদে অতুকীদের নিয়ােগ করে একটি নিজস্ব গােষ্ঠী গড়ে তুলতে উদ্যোগী হন। এই উদ্দেশ্যে তিনি আবিসিনিয়ার হাবসি ইয়াকুতের ওপর অতিরিক্ত দাক্ষিণ্য প্রদর্শন করেন।

• লাহােরের শাসনকর্তা কিবর খান তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন।

• মূলতান, লাহাের, ভাতিণ্ডার শাসকগণ তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। ভাতিণ্ডার শাসনকর্তা আলতুনিয়া রাজিয়াকে বন্দী করেন কূটকৌশালী রাজিয়া তাকে বিবাহ করেন।

• 1240 খ্রীষ্টাব্দে আলতুনিয়া ও রাজিয়া দিল্লী পুনর্দখলে অগ্রসর হল। কিন্তু ইতিমধ্যে বাহরাম শাহের সঙ্গে যুদ্ধে সেনাবাহিনীর হাতে পরাজিত হন। তাদের হত্যা করা হয় কৈথাল (হরিয়ানা)এর নিকটে।


✓ বাহরাম শাহ (1240-1242 খ্রঃ) :

• রাজিয়ার পর, ইলতুৎমিসের তৃতীয় পুত্র বাহরাম শাহ তুর্কী অভিজাতদের নিয়ে তৈরী চল্লিশচক্রের সমর্থনে সিংহাসনে বসেন।

• নিজ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠানর জন্য তিনি তুকী আমিরদের নেতা ইখতিয়ারউদ্দিন আইতেপিনসহ আরও কয়েকজনকে হত্যা করেন। ফলে ক্ষুব্ধ উলেমারা তুর্কী অভিজাতদের সঙ্গে হাত মেলান।

• নিজাম উল মূলকের চক্রান্তে এই সেনাবাহিনী দিল্লী ফিরে এসে সুলতানকে বন্দী ও হত্যা করেন।


✓ আলাউদ্দীন মাসুদ শাহ (1242-1246 খ্রীঃ) :

• বাহরাম শাহকে হত্যা করার পর রুকনউদ্দীন ফিরােজ শাহের পুত্র আলাউদ্দীন মাসুদ শাহকে দিল্লীর সিংহাসনে বসান। কিন্তু গিয়াসউদ্দীন বলবন ও নাসিরউদ্দিন মামুদ শাহের মাতা মালিকাই-জাহান সুলতানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন এবং নাসিরুদ্দিন মামুদ শাহকে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করেন 1246 খ্রীষ্টাব্দে। D 


✓ নাসিরুদ্দিনমামুদ শাহ (1246-1266 খ্রীঃ) :

• তিনি ইলতুৎমিসের জ্যেষ্ঠ পুত্র নাসিরুদ্দিনের পুত্র নাসিরুদ্দিন মামুদ শাহ সিংহাসনে বসেন। তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ, তাই তিনি দরবেশী সুলতান’ নামে পরিচিত। তিনি 1266 সালে মারা যান।


✓ গিয়াসউদ্দীন বলবন (1266-1287 খ্রঃ) : 

• 1266 খ্রীষ্টাব্দে বলবন সিংহাসনে বসেন।

• তিনি চল্লিশ চক্রের ক্ষমতা খর্ব করেন এবং সুলতানের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেন।

• তিনি নিজে দেশের খবর রাখার জন্য গুপ্তচর (বারি) নিয়ােগ করেন।

• তিনি শক্তিশালী সেনাবাহিনী (দিওয়ানই-আর্জ) গঠন করেন, যাতে মােঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করতে পারেন।

• তিনি দোয়াব অঞ্চলে গাছ কেটে, দুর্গ নির্মাণ করেন এবং রাজপুতানার মেওয়াটি দস্যুদের উৎখাত করেন।

• পারসিক দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে তিনি দরবারে ‘পাইবস’ (সম্রাটের পদযুগল চুম্বন) এবং “ সিজদা' (সম্রাটের সামনে নতজানু হওয়া) প্রবর্তন করেন।

• তিনি নিজেকে পৌরাণিক তুর্কী বীর আফ্রাসিয়ারের বংশধর বলে দাবী করেন এবং উপাধি নেন জিল ইঙ্কাহী (ঈশ্বরের ছায়া)।

• দিওয়ান ই আর্জ নামে একটি সেনাদপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন। • 'নররােজ’ বা বসন্ত উৎসবের প্রচলন করেন।

• তিনি পারসিক সাহিত্যের পৃষ্ঠপােষক ছিলেন এবং আমির খসরুকে বিশেষ আনুকূল্য দেখান।

• মােঙ্গল আক্রমণ ও বলবনের বার্ধক্যের সুযােগ নিয়ে বলবনের ক্রীতদাস ও বাংলার শাসনকর্তা তুথ্রিল খাঁ 1278 খ্রীষ্টাব্দে স্বাধীনতা ঘােষণা করেন, 1285 খ্রীঃ তুড্রিল খাঁ পরাজিত ও নিহত হন।

• তিনি নিজেকে নিয়াবৎই-খুদাই নামে আক্ষায়িত করেন। কায়কোবাদ (1287-1290 খ্রঃ) :

• বলবনের মৃত্যুর পর মূলতঃ দিল্লীর প্রবীণ কোতােয়াল ফকরউদ্দিনের উদ্যোগে আমির ওমরা বুঘরা খানের সতেরাে বছর বয়স্ক পুত্র মুইউদ্দিন কায়কোবাদকে সিংহাসনে বসান। কিন্তু খলজীদের হাতে কায়কোবাদ নিহত হন। এর সাথে সাথে। ইলবারী তুর্কী বংশের অবসান ঘটে ও খলজী বংশের প্রতিষ্ঠা হয়।


✓খলজী রাজবংশ (12901320 খ্রীঃ)

• খলজিরা ছিল তুর্কী। দীর্ঘ 200 বছর এই অঞ্চলে বসবাসের ফলে তার আফগান ভাবধারা, সংস্কৃতি ও আচার আচরণে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এই কারণে আদি তুর্কীরা তাদের তুর্কী বলে মানতে অস্বীকার করত।

• গজনির সুলতান মামুদ ও মহম্মদ ঘােরীর সেনাবাহিনীতে প্রচুর খলজি যােগ দেয়। তরাইনের প্রথম যুদ্ধে জনৈক খলজি সেনা আহত মহম্মদ ঘুরীর প্রাণ রক্ষা করেন।

• তুর্কী কথায় খলজী শব্দের অর্থ হল যােদ্ধা।

• খলজিরা সিংহাসন আরােহণের পর তুর্কী, তাজিক, ভারতীয় মুসলমান, হিন্দু সকলকে শাসকগােষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করেন।


✓ জালালউদ্দীন খলজী (1290-1296 খ্রীষ্টাব্দ) : 

• খলজী সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।

• তিনি কঠোর শাস্তি না দিয়ে সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ করে তিনি অভিজাতদের সদিচ্ছা লাভে তৎপর হন।

• 1290 খ্রীষ্টাব্দে তিনি রণথম্বােরের রানা হামিরদেবের বিরুদ্ধে একটি অভিযােগ পাঠান। বারংবার আক্রমণ সত্ত্বেও তিনি রণথম্বাের দুর্গটি দখল করতে ব্যর্থ হন।

• জালালউদ্দিন-এর রাজত্বকালের অন্যতম উল্লেখযােগ্য ঘটনা হল তার ভ্রাতুস্পুত্র ও জামাতা এবং কারা ও মানিকপুরের শাসনকর্তা আলি গুরসাম্প-এর দাক্ষিণাত্য অভিযান, 1294 সালে। গুরসাম্প বা আলাউদ্দীন ছিলেন প্রবল উচ্চাকাঙ্ক্ষী। তার নজর ছিল দিল্লীর সিংহাসনের দিকে।

• তার এক কন্যার সাথে চেঙ্গিজ খাঁর বংশধর উলুঘ খাঁ-এর বিবাহ

• আলাউদ্দীন খলজী, জালালউদ্দিনকে হত্যা করে দিল্লীর সিংহাসনে বসেন।


✓  আলাউদ্দীন খলজী (1296-1316 খ্রীঃ) :

• জালালউদ্দিন খলজী-এর ভ্রাতুস্পুত্র ও জামাতা ছিলেন আলাউদ্দীন খলজী।

• আলাউদ্দীন তার কাকাকে হত্যা করে সিংহাসন আরােহণ করেন 1296 খ্রীষ্টাব্দে।

• তিনিই প্রথম দিল্লীর তুকী সুলতান, যে রাজনীতিকে ধর্ম থেকে আলাদা করেছেন এবং তিনি ঘােরতর স্বৈরতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন

• “Kingship knows no Kingship' এই মতাদর্শে বিশ্বাসী। ছিলেন।

• আলাউদ্দীন জয় করেন গুজরাট (1298 খ্রীঃ), রণথাম্বাের (1301 খ্রীঃ), মেবার (1303 খ্রীঃ), মালব (1305 খ্রীঃ) এবং জলৌর (1311 খ্রীঃ)।

• দাক্ষিণাত্যে আলাউদ্দীনের সেনাপতি মালিক কাফুর পরাজিত করেন রামচন্দ্রকে (দেবগিরির যাদব বংশীয় শাসক), প্রতাপ রুদ্রদেব (ওয়ারঙ্গেল-এর কাকটীয় বংশীয় শাসক), তৃতীয় বীর বল্লাল (দ্বারসমুদ্রের হয়সালা বংশীয় শাসক), বীর পাণ্ড্য মােহরাই-এর পাণ্ড্য শাসক।

• তিনি প্রথম আলেকজান্ডার বা সিকন্দরই-সাহি উপাধি নেন। 


✓ আলাউদ্দীনের শাসন সংস্কার 

> বিদ্রোহ যাতে না ঘটে/দমন করার উদ্দেশ্যে তিনি 4টি পদক্ষেপ নেন—

• অভিজাতদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেন।

• গুপ্তচর বাহিনী পুনর্গঠিত করে সাম্রাজ্যের সর্বত্র তাদের নিযুক্ত করেন।

• মদ্যপান নিষিদ্ধ বলে ঘােষণা করা হয়।

• সামাজিক অনুষ্ঠান, পানভােজন, সম্রাটের অনুমতি ব্যতীত নিষিদ্ধ হয়।

> আলাউদ্দীন তার বিশাল সেনাবাহিনীকে নগদ অর্থে বেতন দিতেন।

> দাগ (অশ্বের চিহ্নিতকরণ) ও হুলিয়া (সেনার চিহ্নিতকরণ) ও চেহারা (সেনাবাহিনীর বিবরণ লিপিবদ্ধ করা থাকত) প্রথার প্রবর্তন করেন।

> দিল্লীতে চারটি বাজার ব্যবস্থা চালু করেন। সেগুলি হল : 

১। শস্য

২। কাপড়, চিনি, শুকনােফল, তেল এবং মাখন

৩। ঘােড়া, দাস ও গবাদি পশুর

৪। বিভিন্ন প্রয়ােজনীয় দ্রব্য।

> তিনি বাজার ব্যবস্থার তত্ত্বাবধানের জন্য শাহনাই মাণ্ডী' নামে রাজকর্মচারী নিয়ােগ করেন।

> মুনহিয়ান’ নামে গুপ্তচর নিয়ােগ করা হয়, বাজার ব্যবস্থার খবরাখবর দেওয়ার জন্য।

→ প্রত্যেকটি দ্রব্যের মূল্য স্থির করা ছিল, যদি কোন অসাধু ব্যবসায়ী ধরা পড়ত তাদের কঠোর শাস্তি হত।

→ কর সংগ্রহের জন্য দিওয়ানইমুন্তাখরাজ (খাজনা সংগ্রহের দপ্তর) বলে নতুন দপ্তর স্থাপন করা হয়।

→ দিল্লী সুলতান সাম্রাজ্যে, প্রথম সুলতান আলাউদ্দীন খলজী ভূমি পরিমাপ করে, নগদ অর্থে ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা চালু করেন। 

• সামরিক সংগঠন

→ 1299 সালে গুজরাট বিজয়ের পর আলাউদ্দীন প্রায় ত্রিশহাজার নবমুসলমানকে হত্যা করেন। গুজরাটের রাণী ও হাবসী কাফুরকে দিল্লীতে নিয়ে আসা হয়।

→ পরবর্তীকালে মালিক কাফুর নায়েব (সেনাপ্রধান) হন।

→ আলাউদ্দীন চিতাের আক্রমণ করলে রাণা রতন সিং বী মত যুদ্ধ করেন এবং পরাজিত হন। তাঁর রাণী পদ্মাবতী জওহর ব্রত পালন করেন।


• শিল্প ও সাহিত্য

>  আমির খসরু ও মির হাসান দলভী তার রাজসভা অলংকৃত করতেন।

>  তিনি কুতুব মিনারের প্রবেশের স্থানে আলাই দরজা’ তৈরী করেন।

>  সিরি (দিল্লীতে)-তে নতুন রাজধানী স্থাপন করেন।


✓ মুবারক খান (1316-1320 খ্রীঃ) :

• মালিক কাফুরের মৃত্যুর পর আলাউদ্দীনের পুত্র কুতুবউদ্দীন মুবারক কারাগার থেকে মুক্ত হন এবং কিছুদিন শিশু সুলতান শিহাবউদ্দীন ওমরের প্রতিনিধিরূপে শাসনকার্য পরিচালনা করেন।

• কিছুদিন পর তিনি শিশু সুলতানকে হত্যা করে সিংহাসনে 30991 He Declaned you banak Shah

• সিংহাসনে বসে তিনি উদারনীতি গ্রহণ করেন, তিনি আলাউদ্দিনের --সমস্ত কঠোর আইন প্রত্যাহার করেন।

• জনৈক খসরু খান নামক যুবকের দ্বারা প্রভাবিত হন এবং তাকে উজির’ পদে নিয়ােগ করেন। শেষ পর্যন্ত খসরুর চক্রান্তে তিনি নিহত হন। তার মৃত্যুতে খলজী বংশের অবসান ঘটে।


✓ খসরু খান (1320 খ্রঃ) :

• কুতুবউদ্দীন মুবারকশাহের মৃত্যুর পর খসরু খান “নাসিরুদ্দীন খসরু শাহ” উপাধি নিয়ে সিংহাসনে বসেন।

• দীপালপুরের শাসক গাজি মালিক খসরু খানকে হত্যা করেন। গাজি মালিক “গিয়াসউদ্দীন তুঘলক শাহ” উপাধি ধারণ করে দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। দিল্লীতে এর পর থেকে তুঘলক বংশের শাসন শুরু হয়।



1 comment:

  1. চোলতানী যুগৰ ইতিহাসৰ বিভিন্ন প্ৰধান উৎসৰ বিষয়ে আলোচনা কৰা?

    ReplyDelete







Twt
D1 Study Subscribe our Youtube Channel
Subscrib