Breaking







Tuesday 1 June 2021

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ১৯৪১ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত বিস্তারিত আলোচনা।Detailed discussion of India's independence struggle from 1941 to 1947.

 


প্রিয় বন্ধুরা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টার আজকে আলোচনা করতে চলেছে যেখানে আপনারা সম্পূর্ণ ডিটেইলস বিবর্তনের সঙ্গে প্রত্যেকটা গান পাবেন । প্রতিযোগিতা পরীক্ষায় আপনারা যে সমস্ত প্রশ্ন দেখে থাকেন এই চারটা কমপ্লিট করার পরে আশা করছি আর কোনো অসুবিধা হবে না।


✍️ ক্রিপস মিশন (মার্চ-এপ্রিল1941)

• 1942 এর মার্চ মাসে স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস-এর নেতৃত্বে একটি মিশন সংবিধানের প্রস্তাব নিয়ে ভারতে পাঠানাে হয়েছিল যুদ্ধে ভারতীয়দের সমর্থনের প্রয়ােজনে।

• প্রধান প্রস্তাব

• এক ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র ‘ডােমিনিয়ান স্ট্যাটাস এর সাথে গঠন করা হবে।

• এটা কমনওয়েলথ-এর সাথে যুক্ত ভাবে তার সম্পর্ক স্থির করতে পারবে এবং জাতিসংঘ এবং অন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

• যুদ্ধান্তে নতুন সংবিধান তৈরীর জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করা হবে।

• এই পরিষদের সদস্য কিছু নির্বাচিত হবেন প্রাদেশিক পরিষদ থেকে সমানুপাতি প্রতিনিধিত্বের দ্বারা এবং আংশিক দেশীয় রাজাদের দ্বারা মনােনীত হবেন।

• ব্রিটিশ সরকার এই নতুন সংবিধান গ্রহণ করবে দুটি শর্তে----

      ০ কোন প্রদেশ যুক্তরাষ্ট্রে যােগদান করতে ইচ্ছুক না হল তারা পৃথক সংবিধান এবং ইউনিয়ন তৈরী করবে।

      ০ নতুন সংবিধান তৈরীর এবং ব্রিটিশ সরকার একটি চুক্তি সাক্ষর করবে ক্ষমতার হস্তান্তর করতে এবং জাতি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষার্থে।

• এর মধ্যে ভারতের প্রতিরক্ষা থাকবে ব্রিটিশদের হাতে এবং গভর্নর জেনারেল এর ক্ষমতা একই থাকবে।

• গান্ধীজী এই প্রস্তাবকে ‘ফেল পড়া ব্যাঙ্কের ওপর চেক কাটার সামিল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। 

• কংগ্রেস বিরােধিতা করেছিল।

• পূর্ণ স্বরাজের পরিবর্তে ডােমিনিয়ান স্ট্যাটাস-এর মর্যাদা।

• নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বদলে মনােনীত সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব।

• প্রদেশগুলি চাইলে বিচ্ছিন্ন হতে পারবে যেটা জাতীয় ঐক্যের বিরুদ্ধে ছিল।

• তৎক্ষণাৎ ক্ষমতা হস্তান্তরের কোন পরিকল্পনা এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অংশিদারিত্ব দুইয়েরই অনুপস্থিতি।

• গভর্নর জেনারেল-এর আধিপত্য থেকে গেল এবং গভর্নর জেনারেলকে সাংবিধানিক প্রধান করার দাবি গ্রহণ করা হল।

• মুসলিম লীগের বিরােধিতা

• একক ভারত রাষ্ট্রের ধারণাকে সমালােচনা করেছিল।

• সংবিধান সভা সৃষ্টির প্রস্তাবকেও পছন্দ করেনি এবং প্রদেশগুলির ইউনিয়নে যােগ দেওয়ার ব্যাপারে স্থির করার প্রতিক্রিয়াকেও গ্রহণ করেনি।

• প্রস্তাবগুলি মুসলিম নিজ-সংকল্পের অধিকার এবং পাকিস্তান সৃষ্টি থেকে বঞ্চিত করেছিল।


✍️ ভারত ছাড়াে আন্দোলন,1942

• গান্ধীজী ক্রিপসের প্রস্তাবকে ‘ফেল করা ব্যাঙ্কের ওপর চেক কাটার সামিল’ বলেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বােম্বাই অধিবেশনে নীচের মুখ্য বিষয়গুলির ওপর

• ভারতে ব্রিটিশ শাসনের তৎক্ষণাৎ সমাপ্তি।

• স্বাধীন ভারতের দাবী যে নিজেকে সমস্ত রকমের ফ্যাসিবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদ থেকে রক্ষা করবে।

• ব্রিটিশ প্রত্যাহারের পর এক অস্থায়ী ভারত সরকার।

• ব্রিটিশ শাসনের পরিবর্তে আইন অমান্য আন্দোলন।

• সরকার যাইহােক কংগ্রেসের সাথে কোন প্রকার সন্ধি করার মানসিকতা ছিল না অথবা আন্দোলন শুরু হবে তার অপেক্ষা করারও মানসিকতা ছিল তাই এক কোপেই সমস্ত কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হল এবং তাদের অজ্ঞাত গন্তব্যে পাঠিয়ে দেওয়া হল।

• ভারত ছাড়াে আন্দোলন দেশের স্বাধীনতা অন্তিম প্রচেষ্টা ছিল কারণ

• একটি বৃহৎ সংখ্যক বিদ্যালয়ের ও মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করল আন্দোলনে যােগ দেওয়ার জন্য।

• জাতির যুবকেরা দেশ প্রেমিক এবং সাথে আন্দোলনে যােগদান করল ধর্মঘট, জন সাধারনের মিটিং, সরকারী গৃহ আক্রমণ, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি করে।

• ব্রিটিশ সরকার 538 রাউন্ড গুলি চালানাের নির্দেশ দেয়। অবশেষে 7000 লােকের মৃত্যু হয়। প্রায় 60,229 লােকেদের কারারুদ্ধ করা হয়।

• এটা ভারতের স্বাধীনতার পথ রচনা করেছিল এবং ভারতীয়দের মধ্যে সাহসিকতা, উৎসাহ, এবং সম্পূর্ণ আত্মত্যাগের অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছিল।

• আন্দোলনের সময় কোন সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছিল না।

 • আন্দোলন এই সত্যটি প্রতিষ্ঠা করেছিল যে ভারতকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আর শাসন করা যাবে না।


গান্ধীজীর অনশন :

• 12ই ফ্রেব্রুয়ারী–4ই মার্চ, 1943। 

• গান্ধীজী 21 দিনের অনশন শুরু করলেন ভারত ছাড়াে আন্দোলন চলাকালীন মানুষের হিংসার নিন্দা করে।


রাজাগােপালাচারী ফর্মুলা (1944)

• সি. রাজাগােপালাচারী, প্রবীণ নেতা কংগ্রেস-লীগ সহযােগিতার জন্য একটি ফর্মুলা প্রস্তুত করেছিলেন। গান্ধী এই ফর্মুলা গ্রহণ করলেন।

• এখানে লীগের পাকিস্তানের দাবীকে উহ্যভাবে গ্রহণ করেছিল।

• বীর সাভারকরের দ্বারা পরিচালিত হিন্দু নেতারা সি. আর পরিকল্পনা নিন্দা করেছিল।

• সি. আর পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল

• মুসলিম লীগ কংগ্রেসের স্বাধীনতার দাবিকে অনুমােদন করবে।

• লীগ কংগ্রেসকে সহযােগিতা করবে কেন্দ্রে এবং সাময়িক সরকার গঠনের জন্য।

• যুদ্ধের পর সমগ্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের এলাকাগুলির সমগ্র জনগণ হয় গণভােটের দ্বারা পৃথক সার্বভৌম রাষ্ট্র তৈরী করবে অথবা নয়।

• বিভাজনের গ্রহণের ক্ষেত্রে চুক্তি যৌথভাবে করা হবে প্রতিরক্ষা, ব্যবসা, যােগাযােগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে। 

• উপরের কথাগুলি কার্যকরী হবে কেবলমাত্র যদি ইংল্যান্ড সমস্ত ক্ষমতা ভারতকে হস্তান্তর করে দেয়।


জিন্নাহর আপত্তি

• জিন্নাহ চেয়েছিলেন কংগ্রেস দ্বিজাতি তত্ত্ব গ্রহণ করুক। 

• তিনি চেয়েছিলেন উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বে কেবলমাত্র মুসলিমরাই ভােট দিক। সমগ্র জনতার নয়।

• তিনি সাধারণ কেন্দ্র-এর ধারণারও বিরােধিতা করেছিলেন।

        এইভাবে, যখন কংগ্রেস লীগের সাথে সহযােগিতা করতে প্রস্তুত ছিল ভারতীয় ইউনিয়নের স্বাধীনতার জন্য, লীগ ইউনিয়নের স্বাধীনতা নিয়ে চিন্তাই করেনি। শুধুমাত্র পৃথক রাষ্ট্র গঠনেই আগ্রহ ছিল।


✍️ দেশাই লিয়াকৎ চুক্তি (1944)

• কংগ্রেসের নেতা ভুলাভাই দেশাই এবং মুসলিম লীগের নেতা লিয়াকৎ আলি খান। প্রস্তাবের খসড়া তৈরী করলেন কেন্দ্রে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের জন্য গতি ছিল।

• কংগ্রেস ও লীগ থেকে সমসংখ্যক মনােনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় আইন সভায়।

• সংখ্যালঘুদের জন্য 20 শতাংশ আসন সংরক্ষিত।

• এই সমস্ত ক্ষেত্রে কংগ্রেস ও লীগের মধ্যে কোন মীমাংসা হবে না।

• কিন্তু কংগ্রেস ও লীগ-এর মধ্যে এক ধরনের মিল স্থির হল পরবর্তীকালের ..ফলের ভিত্তিতে।


✍️ সিমলা বৈঠক অথবা ওয়াভেল পরিকল্পনা (14ই জুন-14ই জুলাই, 1945)

• ভাইসরয় লর্ড ওয়াবেল, 1945 সালের জুন মাসে লর্ড ওয়াভেল একটি বৈঠক আহ্বান করেছিলেন।

• গভর্নর জেনারেল এর কার্যনির্বাহক পরিষদ পুনর্গঠনের লক্ষ্য নতুন সংবিধান তৈরী স্থগিত রেখে।

০ প্রধান প্রস্তাব

• গভর্নর জেনারেল এবং কমান্ডার-ইন চিফ ব্যতিক্রম, কার্য নির্বাহক পর্ষদের সমস্ত সদস্যরা ভারতীয় হবে।

• পুনগঠিত পর্ষদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসাবে 1945 এর আইন কাঠামাে অনুযায়ী কাজ করবে (কেন্দ্রীয় সভার কাজে অনুগত নয়)।

• হিন্দু ও মুসলমান-এর সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

• গভর্নর জেনারেল তার মন্ত্রীদের উপদেশ অনুযায়ী ভেটো ব্যবহার করতে হবে।

• বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা কার্যনির্বাহক পর্যদে ভাইসরয়ের কাছে মনােনয়নের জন্য তালিকা পেশ করবে।

• যদি দেখি তালিকা সম্ভব না হয়, তখন পৃথক তালিকা জমা দিতে হবে।

• নতুন সংবিধান তৈরীর সম্ভাবনা উন্মুক্ত রাখতে হবে যুদ্ধ অবশেষে জিতে যাওয়ার পর।


✍️ ভারতীয় জাতীয় বাহিনী(INA)

• ভারতীয় জাতীয় বাহিনীর ধারণা প্রথম কল্পনা করেছিলেন ব্রিটিশ ভারতীয় বাহিনীর একজন ভারতীয় অফিসার মােহন সিং-এর দ্বারা মালয়ে। যখন তিনি পিছিয়ে যাওয়া ব্রিটিশ সৈন্যে যােগ না দেওয়ার স্থির করলেন এবং জাপনীসদের পরিবর্তে সাহায্য চাইলেন।

• জাপানীরা মােহন সিং-এর হাতে যুদ্ধে বন্দী ভারতীয়দের তুলে দিলেন। যিনি তাদের ভারতীয় জাতীয় বাহিনীতে যুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন।

• 1942 সালে সিঙ্গাপুরের পতনের পর। মােহন সিং আরাে 45000 যুদ্ধে বন্দী ভারতীয়দের পেলেন তার অনুপ্রেরণার ক্ষেত্রের মধ্যে।

• 1943 সালের ২রা জুলাই সুভাষ চন্দ্র বােস সিঙ্গাপুর পৌঁছলেন এবং যুদ্ধ ধ্বনি উত্থাপন করলেন ‘দিল্লী চলাে’।

• তাকে ‘ইন্ডিয়ান ইনডিপেনডেন্স লীগ’-এর সভাপতি নির্বাচিত হলেন এবং ভারতীয় জাতীয় বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার হলেন শীঘ্রই।

• তিনি বিখ্যাত শ্লোগান দিলেন ‘জয় হিন্দ।

• আই, এন. এ. তিনটি ব্রিগ্রেডের নাম দেওয়া হল—সুভাষ বিগ্রেড, গান্ধী বিগ্রেড এবং নেহেরু বিগ্রেড।

• মহিলাদের সেনাদলের নাম দেওয়া হয়েছিল রানী লক্ষীবাঈ-এর নাম অনুসারে। লক্ষ্মী সাইগল নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

• ভারতীয় জাতীয় বাহিনী কোহিমাতে জয় সুনিশ্চিত করে ইম্ফলের দিকে যাত্রা করল কিন্তু 1945 সালে জাপানের হারের পর ভারতীয় জাতীয় বাহিনীর সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ

• এই অবস্থার মধ্যে সুভাষচন্দ্র বােস তাইওয়ান গেলেন তার টোকিয়ে যাওয়ার পথে অনুমান করা হয় 1945-এর 18ই আগস্ট প্লেন দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।

•দিল্লীর রেড ফোর্টে ভারতীয় জাতীয় বাহিনীর বিচার হয়।

• পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু, ভুলাভাই দেশাই, কৈলাশ নাথ কাঠজু, অসফ আলি তেজ বাহাদুর সাপ্রু সৈন্যদের পক্ষে মামলা লড়েছিলেন।


✍️রয়্যাল ভারতীয় নৌবাহিনী/ নৌবিদ্রোহ (৪ই ফেব্রুয়ারী 1945)

• 1946 এর 18ই ফেব্রুয়ারী বােম্বের এইচ.এম.আই.স. তলােয়ার জানাজির নৌসেনারা বিদ্রোহ ঘােষণা করেন। এবং বি. সি. দত্তর গ্রেপ্তার, যিনি জাহাজে ভারত ছাড়াে’ লিখেছিলেন।

• 19শে ফেব্রুয়ারী 1946 করাচীতে এইচ. এম. এস. হিন্দুস্থান বিদ্রোহ ঘােষণা করে।

• বল্লভ ভাই প্যাটেল এবং জিন্না যুগ্মভাবে বিদ্রোহ-এর উপর বিশ্বাস রেখে 1946 এর 23 শে ফেব্রুয়ারী তাদেরকে আত্ম সমর্পণ করতে বললেন। •

• ব্রিটিশেরা উপলব্ধি করলেন এই ভাবে ভারতীয়দের মধ্যে জাগরণ এবং সশস্ত্র বাহিনীর বিদ্রোহ। এটা ভারতে তার চির স্থায়িত্ব ধরে রাখতে পারবে না।


✍️ ক্যাবিনেট মিশন (মার্চ-জুন, 1946)

• 15ই মার্চ, 1946 লর্ড ক্লিমেন্ট এটলি (ইংল্যান্ডের প্রধান মন্ত্রী) এক ঐতিহাসিক ঘােষণা করলেন যেখানে স্বায়ত্ত্ব শাসনের অধিকার এবং ভারতের জন্য সংবিধান তৈরীর কথা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

• ফলস্বরূপ ব্রিটিশ ক্যাবিনেটের প্যাট্রিক লরেন্স, স্যার স্ট্রাফোর্ড ক্রিপস এবং এ. ভি. আলেক জান্ডারকে ভারতে পাঠানাে হয়েছিল, এটা ক্যাবিনেট মিশন নামে পরিচিত।


• ক্যাবিনেট মিশনের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল—

• প্রদেশের তিনটি দল তাদের আলাদা সংবিধান তৈরী করতে পারে তার জন্য চুক্তি।

• ভারতের ইউনিয়ন তৈরীর প্রস্তাব যা ব্রিটিশ ভারত এবং দেশীয় রাজ্য নিয়ে গঠিত।

• ইউনিয়নের হাতে বৈদেশিক ব্যাপার, প্রতিরক্ষা, যােগাযােগ প্রভৃতি থাকবে অবশিষ্ট ক্ষমতাগুলি প্রদেশের হাতে থাকবে।

• অন্তবর্তীকালীন সরকার ... প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব যা ক্ষমতায় থাকার ... না এক নতুন সরকার তৈরী করছে সংবিধান সভার ওপর দ্বারা তৈরী নতুন সংবিধানের উপর ভিত্তি করে।

• পূর্ণ বিকশিত পাকিস্তান তৈরীর প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান। মুসলিম লীগ ও কংগ্রেস পরিকল্পনাকে গ্রহণ করে।

• ফলস্বরূপ নির্বাচন হবে 1946-এর জুলাই মাসে, সংবিধান সভা তৈরীর জন্য।

• কংগ্রেস 214টি আসনের মধ্যে 205টি পেল। মুসলিম লীগ 78টি মুসলিম আসনের মধ্যে 73টি পেল। 1946 এর ২রা সেপ্টেম্বর জহরলাল নেহেরুর নেতৃত্বে এর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তৈরী হল। 


✍️ জিন্নাহর প্রত্যক্ষ সংগ্রাম প্রস্তাব (16ই আগস্ট, 1946)

• জিন্নাহর নির্বাচনের ফলাফলে ভীত হয়ে ওঠে। কংগ্রেস 273টি আসনের মধ্যে 209টিতে জিতে জয়লাভ করে। কারণ মুসলিম লীগ সংবিধান সভা থেকে পুরােপুরি বাদ পড়ে যাওয়ায় আশঙ্কা এসেছিল।

• তাই মুসলিম লীগ 1946 এর 29শে জুলাই ক্যাবিনেট মিশনের পরিকল্পনাকে গ্রহণ করা প্রত্যাহার করলেন।

• এটা প্রত্যক্ষ সংগ্রাম’ প্রস্তাব পাশ করলেন যা ব্রিটিশ সরকার এবং কংগ্রেসের উভয়েরই নিন্দা করলেন (16ই আগস্ট, 1946)। এর ফলে ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হল।


✍️অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (2রা ডিসেম্বর, 1946)

• ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে কংগ্রেস মনােনীত প্রার্থীদের নিয়ে 1946 এর ২রা সেপ্টেম্বর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। নেহেরুকে উপসভাপতি ঘােষণা করা হয়। গভর্নর জেনারেলকে রাষ্ট্রপতি করা হয়। মুসলিম লীগ প্রথমে যােগ দিতে অস্বীকার করে। লর্ড ওয়াভেল লীগকে 1946-এর অক্টোবর মাসে বিশ্বাস করিয়ে যােগদান করতে বললেন।


✍️ সংবিধান সভার গঠন (9ই ডিসেম্বর 1946) 

• সংবিধান সভা ৩ই ডিসেম্বর, 1946 গঠিত হয় এবং ড. রাজেন্দ্র প্রসাদকে এর সভাপতি নির্বাচিত করা হয়, কিন্তু লীগ যােগদান করেনি। মুসলিম লীগের লিয়াকৎ আলি খানকে অর্থমন্ত্রী করা হয়।


✍️ এটলির ঘােষণা (20শে ফেব্রুয়ারী 1947)

• 1948, 30শে জুনের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেওয়া হবে স্থির করা যায়। যদিও ভারতীয় রাজনীতিবিদরা সংবিধানে সেই সময়ে রাজী হননি।

• ব্রিটিশ ক্ষমতা এবং আইনের দেশীয় রাজ্যগুলির ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে একে অপরের সাথে চুক্তি বদ্ধ হবে, কিন্তু এটা পরবর্তী কোন সরকারকে দেওয়া হবে না।

• মাউন্টব্যাটেন ওয়াভেল এর স্থলে ভাইসরয় হিসাবে আসবে।

• যাতে দেশবিভাগের কথা অন্তর্ভুক্ত ছিল যদি সংবিধান সভা সম্পূর্ণ প্রতিনিধি দিতে না পারে, ক্ষমতা একের বেশি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে হস্তান্তরিত হবে।


✍️ মাউন্ট ব্যাটন পরিকল্পনা(3রা জুন, 1947)

• 20শে ফেব্রুয়ারী, 1947 প্রধান মন্ত্রী এটলি হাউস ওফ কমন্স-এ ক্ষমতা হস্তান্তরের নির্দিষ্ট ইচ্ছা প্রকাশ করলেন।

• ক্ষমতা হস্তান্তরকে কার্যকর করতে এটলি লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনকে ভারতের ভাইসরয় হিসাবে পাঠানাের জন্য স্থির করলেন।

• লর্ড মাউন্টব্যাটেন বিশাল ক্ষমতায় সজ্জিত হয়ে, 24শে মার্চ, 1947 ভারতের ভাইসরয় হলেন।

• ভারতের বিভাজন ও পাকিস্তানের গঠন তার কাছে অপরিহার্য মনে হয়।

• বিস্তৃত পরামর্শের পর, লর্ড মাউন্ডব্যাটেন ভারত বিভাজনের পরিকল্পনাকে 3রা জুন, 1947 আমল দিলেন।

• কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ পরিশেষে মাউন্টব্যাটন পরিকল্পনাকে অনুমােদন করে।

• ভাইসরয় হিসাবে মাউন্টব্যাটেন তার পূর্বসূরীদের থেকে বেশী দৃঢ় এবং তৎপর ছিলেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে।

• তার কাজ ছিল সংহতি অথবা বিভাজনের মধ্যে যে কোন একটিকে বাছাই করার পরীক্ষা করা অক্টোবর 1947 এর মধ্যে এবং তারপর ব্রিটিশ সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া।

• বাংলা ও পাঞ্জাবকে বিভাজিত করা হবে এবং উত্তর পূর্ব সীমান্ত প্রদেশ ও আসামের সিলেট জেলায় গণ ভােট হবে। বাংলা ও পাঞ্জাবের আইনসভা এই দুই প্রদেশের বিভাজনের পক্ষে স্থির করবে। এইভাবে পূর্ব বাংলা এবং পূর্ব পাঞ্জাব ভারতে থাকবে। সিলেটে গণ ভােটের ফল স্বরূপ পূর্ববঙ্গের সাথে অসহযােগিতা করল।

• 1947 সালের জুলাই মাসে ভারত ব্রিটিশ সরকার পাশ করলেন যেখানে মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা দ্বারা প্রস্তাবিত শর্তগুলিই বেশীর ভাগ ছিল।

•1947 সালের 15ই আগস্ট ভারত ও পাকিস্তানকে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দিন স্থির হল।


✍️ ভারত শাসন আইন, 1947

ব্রিটিশ সরকার পূর্বে অনুমােদিত মাউন্ট ব্যাটেন পরিকল্পনার সাথে সহমত হল 18ই জুলাই, 1947 ভারত শাসন আইনকে কার্য করা। আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল—

• 15ই আগস্ট, 1947 সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তান রূপে রাষ্ট্রের বিভাজন কার্যকর হবে।

• ব্রিটিশ সরকার এই দুই ডােমিনিয়ানকে সমস্ত ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

• এই সীমানা কমিশন বাংলা ও পাঞ্জাব প্রদেশ গুলির সীমা নির্দেশ করবে।

• এই দুই জিমিনিয়ানের সংবিধান সভাকে এই আইন ক্ষমতা হস্তান্তর করবে যা তাদেরকে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব দেবে তাদের নিজেদের সংবিধান গঠন করার।

• র্ডক্লিফ সীমানা কমিশন ভারত ও করার সীমানা রচনা করে।

• 15ই আগস্ট, 1947 ভারত এবং 14ই আগস্ট 1947_ পাকিস্তান দুটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করল।

• লর্ড মাউন্টব্যাটেন প্রথম স্বাধীন ভারতের গভর্নর জেনারেল নির্বাচিত হলেন সেখানে মহম্মদ আলি জিন্নাহ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল নির্বাচিত হলেন।


✍️ স্টেটের একত্রীকরণ

• বল্লভভাই প্যাটেল স্টেটের একত্রীকরণে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করল। কাশ্মীর, হায়দ্রবাদ, জুনাগড় ছাড়া সমস্ত রাজ্যগুলি ভারত সরকারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চুক্তিতে সাক্ষর করল। 1947 এর অক্টোবর মাসে পাকিস্তান বাহিনী ভারত আক্রমণ করলে কাশ্মীরের মহারাজ ভারত রাষ্ট্রের সাথে যুক্ত হল।

• 1948 এর ফেব্রুয়ারী মাসে জুনাগড় রাজ্যে গণভােট হল জুনাগড়কে ভারতের সাথে যুক্ত করা হল। নবাব পাকিস্তানে চলে গেলেন।

• ভিতরের অরাজকতা এবং সামরিক কার্যকলাপ রাজ্যে চলতে থাকায় হায়দ্রাবাদের নিজাম ভারত রাষ্ট্রে যুক্ত হতে বাধ্য হল।

• ফরাসী উপনিবেশগুলির একত্রীকরণ পণ্ডিচেরী, চন্দননগর, মাহে, কারিকল এবং ইয়ানাম 1954 এর শেষে যুক্ত হল।

• পর্তুগীজ উপনিবেশগুলির একত্রীকরণ 1954 সালে দাদরা ও নগর হাভেলী স্বাধীনতার যােদ্ধাদের দ্বারা মুক্ত হয়। 1961 সালে ভারতীয় বাহিনী গােয়া, দমন ও দিউকে পর্তুগীজদের হাত থেকে মুক্ত করল।

No comments:

Post a Comment







Twt
D1 Study Subscribe our Youtube Channel
Subscrib