প্রিয়, বন্ধুরা
প্রিয় বন্ধুরা প্রাচীন ভারতের ইতিহাস থেকে আমরা পরীক্ষায় প্রতিনিয়ত প্রশ্ন আছে দেখি তাই এই চ্যাপ্টার এর উপর সমস্ত ডিটেইলস বর্ননা আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম সাথে এই চ্যাপ্টার থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর প্র্যাকটিস করার জন্য আপনাদের কাছে রাখলাম ।
✍️ প্রাগৈতিহাসিকযুগের ভারতবর্ষ
• পৃথিবী অত্যন্ত প্রাচীন এবং একই সঙ্গে মানুষজনও অত্যন্ত প্রাচীন।
• সবচেয়ে প্রাচীন মানব জীবাশ্ম আফ্রিকাতে পাওয়া গেছে (প্রায় 42 লক্ষ বছর আগের মানব জীবাশ্ম)।
• ভারতবর্ষে জনবসতি আফ্রিকার পরে হয়েছিল।
• মহারাষ্ট্রের বােরি থেকে সম্প্রতি প্রাপ্ত প্রতিবেদনে বলছে যে ভারতবর্ষে 14 লক্ষ বছর আগে মানুষের আবির্ভাব হয়েছিল।
• পৃথিবী 46000 লক্ষ (460 কোটি) প্রাচীন। ভূত্বকের কঠিন আবরণ চারটি পর্যায়ে তৈরী হয়েছে।
(a) ক্রমবিকাশের ফলে ভূত্বকের গঠন।
(b) বিস্ফোরণের ফলে মাটিতে গর্তের গঠন।
(c) বন্যা।
(d) নতুন ভূ-ত্বকের সৃষ্টি (যেটিকে চারটি জিনিসের সমষ্টি বলা হয়)।
• এইসব পর্যায় দুটি যুগে ভাগ করা যায়—যেগুলিকে প্লিসটোসিন (সবচেয়ে সাম্প্রতিকতুষার যুগ) ও হলােসিন (বর্তমান অথাৎ পরবর্তী তুষার যুগ) বলে।
• মানুষ পৃথিবীতে তুষার যুগের শুরুর দিকে এসেছিল। প্রথমদিকের মানুষরা পাথরের অস্ত্র শস্ত্র ব্যবহার করত বলে তাই এই যুগকে প্রস্তর যুগও বলা হয়।
✓ প্রস্তর যুগ (STONE AGE)
• মানুষের সাংস্কৃতিক অতীত বর্ণনা করেছেন পি. এফ. সুহম 1776 সালে।
• সি. জে. থমসেন 1836 সালে ড্যানিস মিউজিয়ামের একই বিষয়বস্তু নিয়ে একটি প্রদর্শনী করেন।
• লুব্বক (ফ্রান্স) প্রস্তর যুগকে পুনরায় পুরাতন প্রস্তর যুগ ও নতুন প্রস্তর যুগে ভাগ করেন। 1930 সালে গ্যাব্রিয়েল ডি মরটিলেট (একজন ফরাসী প্রত্নতত্ত্ববিদ) সাংস্কৃতিক পর্যায়গুলিকে কিছু ভাগে ভাগ করেন ঃ -
(1) পুরাতন প্রস্তর যুগ।
(2) মধ্য প্রস্তর যুগ
(3) নব্য প্রস্তর যুগ
✓ প্রাচীন প্রস্তর যুগ (500000-10000 খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) (PALEOLITHIC AGE)
• প্যালিও (Paleo) মানে “পুরাতন”ও লিথিক মানে “প্রস্তর”। এই শব্দটি (প্যালিওলিথিক) গ্রীক শব্দ। প্রথম বা সবচেয়ে পুরাতন প্রাগৈতিহাসিক সংস্কৃতিকে পুরাতন প্রস্তর যুগ বলে।
• এই সময়টিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় বলা হয়। মানব সভ্যতার বিকাশের জন্য সংস্কৃতিক বিকাশ এই সময়ই সবচেয়ে বেশী স্বতন্ত্রভাবে ফুটে উঠেছিল।
• প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Paleo Age) শব্দটি 1865 খ্রীষ্টাব্দে প্রত্নতত্ত্ববিদ জন লুব্বক গঠন করেন।
• রবার্ট ব্রুস ফুট 1863 খ্রীষ্টাব্দে প্রাচীন প্রস্তর যুগের পাথর ভারতে প্রথম আবিষ্কার করেন।
• প্রাচীন প্রস্তর যুগকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা ভিত্তিতে ঃ
(ক) মানুষরা কি প্রকারের পাথরের অস্ত্র ব্যবহার করত - সেই ভিত্তিতে।
(খ) জলবায়ুতে পরিবর্তনের ভিত্তিতে। প্রাচীন প্রস্তর যুগের তিনটি পর্যায় হল ঃ
(1) সর্ব প্রাচীন বা নিম্ন প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Early Paleolithic Age)
• অস্ত্রশস্ত্রগুলি ছিল প্রধানত হাতের কুঠার এবং মাংস কাটার ছুরি কিছু অস্ত্র সমেত। এই অস্ত্রগুলি ছিল অপেক্ষাকৃত ভোঁতা এবং ভারতবর্ষের সর্বত্র পাওয়া গেছে (শুধুমাত্র সিন্ধু, গঙ্গা, ব্ৰহ্মপুত্র নদের সমভূমি ব্যতীত)।
• প্রাচীন প্রস্তর যুগের অস্ত্রশস্ত্রের সমাবেশ তাপ্তী, গােদাবরী, ভীমা ও কৃষ্ণা নদীর তীরে পাওয়া যায়। এই অস্ত্রগুলি তৈরী করার প্রধান উপকরণ ছিল কোয়ার্টজাইট এবং চার্ট, কোয়ার্টজ এবং ব্যাসল্ট ও ব্যবহৃত হত।
• নিম্ন প্রাচীন প্রস্তর যুগের স্থানগুলি ছিল পাঞ্জাব (বর্তমানে পাকিস্তান) এর শােন (সােহন) নদীর ধারের উপত্যকা। অস্ত্রগুলি উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর জেলার বেলান উপত্যকায় ও মধ্যপ্রদেশের ভােপালের নিকটের গুহা ও পাথরের আশ্রয় স্থানগুলিকে পাওয়া গেছে।
✓ (2) মধ্যবর্তী প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Middle Paleolithic Age) :
• প্রথম দিককার প্রাচীন প্রস্তর যুগের অস্ত্রগুলি ধীরে ধীরে নতুন ধরনের অস্ত্রে পরিণত হয়েছিল। প্রথম দিককার প্রাচীন প্রস্তর যুগের তুলনায় মধ্যবর্তী প্রাচীন প্রস্তর যুগের অস্ত্রগুলি আকারে ছােট, পাতলা ও হাল্কা ছিল। এর জন্য মধ্যবর্তী প্রাচীন প্রস্তর যুগকে স্তরযুক্ত অস্ত্রের শিল্প বলেও উল্লেখ করা হয়।
• কাঁচামালের ব্যবহারেও উল্লেখযােগ্য পরিবর্তন দেখা যায়। মধ্যবর্তী প্রাচীন প্রস্তর যুগের অস্ত্র তৈরীতে। প্রথম দিককার প্রাচীন প্রস্তর যুগে যেখানে কোয়ার্টজাইট, কোয়ার্টজ এবং ব্যাসল্ট ব্যবহৃত হত, সেখানে মধ্যবর্তী প্রাচীন প্রস্তর যুগে সূক্ষ দানাযুক্ত পাথর যেমন চার্ট ও জ্যাম্পার ব্যবহৃত হয় অস্ত্র তৈরী করতে।
• মধ্যবর্তী প্রাচীন প্রস্তর যুগের উল্লেখযােগ্য স্থানগুলি হল লুনী নদীর ধারের উপত্যকা, ডিডওয়ানা চারদিকে রাজস্থানের বুধ পুস্কর, বােলান, শােন ও নর্মদা নদীর ধারের উপত্যকা ও এই সমস্ত উপত্যকা, মধ্য ভারতের উপনদীগুলির (ভীমবেটকা সহ) উপত্যকা, এছাড়াও অন্যান্য স্থানগুলি হল ছােটনাগপুর মালভূমি, দাক্ষিণাত্যের মালভূমি ও পূর্বঘাটের কিছু বিরল ভাবে বিক্ষিপ্ত স্থান।
✓ (3) উচ্চ/অন্তিম প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Upper Paleolithic Age)
• এই সময়ে ভারতের নদীগুলির উপদ্বীপে অনেক জীবাশ্বের একত্র সমাবিষ্ট বহুদৃশ্যপূর্ণ সুদীর্ঘ চিত্রের প্রমান চিত্র আছে।
• প্রাচীন প্রস্তর যুগের পরিবেশে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছিল যেগুলির মানবজাতির বসতি বিন্যাস ও জীবনযাত্রার। উপর নিজস্ব প্রভাব ছিল। এদের মধ্যে কিছু হল ঃ
(1) উঁচু জায়গা ও উত্তর অক্ষাংশে প্রচন্ড শীতল ও শুষ্ক জলবায়ু ছিল।
(2) উত্তর পশ্চিম ভারতে মরুভূমির বিশাল বিস্তার ছিল।
(3) পশ্চিম ভারতের জলনিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে গিয়েছিল। এবং নদীগুলি পশ্চিমদিকে বেগে ধাবমান হয়েছিল।
(4) আগে ভারতবর্ষের প্রচুর জায়গায় গাছ পালা ছিল। কিন্তু প্রাচীন প্রস্তর যুগের শেষের দিকে এসব স্থানে গাছ অনেক কমে যায়।
(5) দক্ষিণ পূর্ব তামিলনাড়ু, সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছের উপকূলবর্তী অঞ্চলে কোয়ার্টজ ও কার্বোনেট এর নীচু পাহাড় (বালিয়াড়ী) তৈরী হয়েছিল, যেটি সমুদ্রের উচ্চতা কমিয়ে দিয়েছিল।
(6) শেষ প্লিসটোসিনে, দক্ষিণ পশ্চিমে বর্ষা দুর্বল হয়ে যেত এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা কয়েক মিটার নীচে নেমে যায়।
(7) শেষদিকের প্রাচীন প্রস্তর যুগে চকমকি পাথরের শিল্প শুরু হয়। এবং আধুনিক ধরনের মানুষের আবির্ভাব হয়। শেষ দিকের প্রাচীন প্রস্তর যুগের স্থানগুলি ভীমবেটকা, ভােপালের দক্ষিণে আবিষ্কৃত হয়েছে।
• একটি পর্যায় থেকে আরেকটি পর্যায়ে গমন ধীর গতিতে হয়েছে। প্রতিটি পর্যায়ে পাথরের অস্ত্রের ধার বেড়েছে।
প্রার্টন প্রস্তর নৃগের এই বিশ ভাগগুলি প্যারাগুলি সারা গুর দূরত্ব, বিভিন্ন ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক বা ইত্যাদি। প্রাচীন প্রস্তর যুগ শেষ পর্যন্ত 10000 টপূর্বাব্দেষযুগের
✓ মধ্য প্রস্তর যুগ (10000 খ্রীষ্টপূর্বাব্দ থেকে 4000 2182717) (MESOLITHIC AGE)
০ এটি হলপ্রাটীন প্রস্তর যুগ ওনব্যপ্রস্তরযুগেরমথ্যেকর? এর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অস্ত্র হল নইিক্রোলিথ (সব পাথরে তৈরী)।
০ মাইক্রোলিথ সবচেয়ে প্রথমে 1867 খ্রীষ্টাব্দে এসিএল কারলাইল বিন্ধ্য পর্বত থেকে অৰিষ্কাৰ করেন। নব্যপ্রস্তর যুগকে বিলম্বিত প্রস্তর যুগ/মাহঁক্রোলিথিক —এইসব নামেও ডাকা হয়।
০ মধ্য প্রস্তর যুগের লােকেরা জাবিনির্বাহত শিকৱ, মাছ ধরা, খাদ্য সংগ্রহ করে। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে গৃহপালিত পশুর সব থেকে পুরােনাে দৃষ্টান্ত পাওয়া গেছে।
০ প্রথমদিকে কুকর, গবাদি পশু, ভেড়া, ছাগল এগুলি গৃহপালিত পশু হিসাবে ব্যবহৃত হত। গম ওবার্লি প্রথমদিকে চাষ করা হত।
০ জীবিকা অর্থনীতি হিসেবে খাদ্য-উৎপাদন মানব সমাজের ক্রমবিকাশের ওপর ও পরিবেশের কিাশের ওপরস্থারীপ্রভাব ফেলেছিল।
০ রাজস্থান, দক্ষিণ উত্তরপ্রদেশ, মধ্য ও পূর্বভারত,কৃষানদার দক্ষিণ দিক এবং রাজস্থানের বাগার এ মাইক্রোলিথিক শিল্পের নিদর্শন পাওয়া গেছে।
০ মেসােলিথিক অস্ত্রশস্ত্র ও অস্ত্রগুলিতে সমান্তরাল দিক করে ধারালাে ছুরি ছিল। সূরু জিনিস যেমন চার্ট, কেলাস, চ্যালসি ডােনি, জ্যাস্পার, কার্নেলিয়ান, দামী কঠিন পাথর অস্ত্রগুলি তৈরী করতে ব্যবহৃত হত। অস্ত্রগুলি সাধারণত থেকে 5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হত।
০ বিবিধ চিত্র ও ভীমবেটকা, আদমগড় ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে। পাথর ও গুহাতে বিবিধ চিত্র পাওয়া গেছে। পশু ও মানুষের। বিবিধ দৃশ্যাবলী এই চিত্রগুলিতে পাওয়া গেছে।
০ পশু হচ্ছে সবচেয়ে বেশী চিত্রিত বন্ধু। চিত্রগুলিতে একাকী পশু অথবা পশুদের ছােট বা বড় দলে বিভিন্ন ভাব - ভঙ্গীতে দেখা গেছে।
• মানুষদেরও পাথরের চিত্রগুলিতে খুব বেশী করেই দেখা গেছে। নৃত্য, দৌড়ানাে, শিকার, খেলাধূলাে, এবং কলহরত অবস্থায় মানুষদের অনেক ছবি আছে। রংগুলি ছিল কৃষ্ণকায়, লাল, সবুজ, সাদা ও হলুদ ছবি আঁকতে ব্যবহৃত হত।
✓ ভীমবেটকা-য় পাথরের গুহা
• ভীমবেটকার পাথরের আশ্রয়স্থল মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলায় অবস্থিত (বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণপ্রান্তে এবং ভােপালের 45 কিমি দক্ষিণে অবস্থিত)।
• এটি প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষের আশ্রয়স্থল ছিল প্রায় 1 লক্ষ বছর ধরে।
• এটি সবচেয়ে বিস্তৃত প্রাচীন প্রস্তর যুগের স্থান যেখানে শিলার ওপর কাজ রয়েছে এবং চিত্র ও রয়েছে।
• এই চিত্রগুলি প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্য প্রস্তর যুগ, চ্যালকোলিথিক (তামা, ব্রোঞ্জ ও প্রস্তরের মিশ্র যুগ) যুগে ছিল। এমনকি ঐতিহাসিক যুগের প্রাচীন ও মধ্য যুগেরও ছিল।
ভীমবেটকা একটি ইউনেস্কো- র (UNESCO) বিশ্ব ঐতিহ্যর স্থান (World Heritage Site)। এটি প্রথমে একটি বৌদ্ধ স্থান বলে পরিগণিত হলেও পরে প্রাচীন প্রস্তর যুগের স্থান বলে গণ্য হয়। বিষ্ণু শ্রীধর ওয়াকাঙ্কার নামক এক পন্ডিত দ্বারা যিনি ‘ভারতীয় প্রস্তর শিল্পের জনক’ বলে পরিচিত। ভীমবেটকা পাথরের আশ্রয়স্থল বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান (World Heritage List)-এ 2003 সালে জায়গা করে নিয়েছে।
✓ নব্য প্রস্তর যুগ (4000 খ্রীষ্টপূর্বাব্দ থেকে 1000 খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) (NEOLITHIC AGE)
• স্যার জন লুব্বক 1865 খ্রীষ্টাব্দে (Neolithic) নব্য প্রস্তর শব্দটি নির্বাচন করেন। মাইলস বুরকিট নব্য প্রস্তর যুগের
চারটি বৈশিষ্ট্য নামাঙ্কিত করেন।
(1) পশুকে গৃহপালিত বানানাে।
(2) কৃষিকার্য ।
(3) মসৃণ, চকচকে পাথরের অস্ত্র।
(4) মৃৎপাত্র তৈরী।
• ভি গার্ডন চাইল্ড নব্যপ্রস্তর যুগের সংস্কার বর্ণনা • 1860 খ্রীষ্টাব্দে জন লি মিসুরিয়ার উত্তর প্রদেশে নব্য প্রস্তর যুগের অস্ত্র ও সেগুলির ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য আবিষ্কার করেন। পরে র্যাশার দক্ষিণ ভারতের বেল্লারীতে এই একই করনে।
জিনিসগুলি আবিষ্কার করেন। মসৃণ পাথরের অস্ত্র এই যুগে ব্যবহৃত হত।
• উত্তরপ্রদেশের কোলডিহা তিনটি পর্যায়ের সাংস্কৃতিক ক্রম দেখা যায় :
(I) নব্য প্রস্তর যুগ।
(II) প্রস্তর, তামা ও ব্রোঞ্জের মিশ্র যুগ
(III) লৌহ যুগ
• বালুচিস্তানের মেহেড়গড় সবচেয়ে পুরানাে নব্য প্রস্তর যুগের স্থান। এটি বােলান নদীর ওপর অবস্থিত যেটি সিন্ধু সভ্যতার সমভূমির একটি শাখা। বিশ্বের সর্বপ্রথম তুলাের চাষ হয়।
• ছােটনাগপুর অঞ্চল, মধ্য ভারত, কৃষ্ণা নদীর দক্ষিণ দিক নব্য প্রস্তর যুগের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বিন্ধ্য পর্বতের বােলান উপত্যকা, নর্মদা নদীর উপত্যকার মধ্য ভাগ প্রস্তর যুগের তিনটি পর্যায়কেই প্রদর্শিত করে।
• কূর্মাহােম ভারতের বৃহত্তম নব্যপ্রস্তর যুগের স্থান।
√ নব্য প্রস্তর যুগের মানুষগণ
• মসৃণ পাথরের অস্ত্র, বিশেষত পাথরের কুঠার এই যুগে ব্যবহৃত হত।
• পিকলিহালে নব্যপ্রস্তর যুগের মানুষরা গবাদিপশু প্রতিপালন করত এবং তারাই সর্বপ্রথম কৃষিকার্য শুরু করেছিল।
• নব্য প্রস্তর যুগে এলাহাবাদ জেলা ধান চাষের জন্য উল্লেখিত হয় ষষ্ঠ সহস্রাব্দে।
• মানুষজন এই নব্য প্রস্তর যুগে রাগি এবং কুলাঠি উৎপাদন করত। এছাড়াও মানুষজন এই যুগে গম, তুললা, উৎপাদন করত। তারা কাদা ও ইটের তৈরী বাড়ীতে বসবাস করত। • নব্য প্রস্তর যুগের লােকেরা মাটির পাত্র বানাত।
• নব্য প্রস্তর যুগে ধান, গম, ও বার্লির চাষ হত।
• মৃৎপাত্র গুলি কালাে হত, পালিশ করা হত,ইষৎ ধূসর রঙের হত এবং মাঝে মাঝে ঔজ্জ্বল্যহীন হত।
• নব্য প্রস্তর যুগের লােকেরা কাপড় বােনার পদ্ধতি জেনে নিয়েছিল। তারা তাদের মৃতদেহকে গাের দিত (মাটি দিয়ে আচ্ছাদিত করত) এবং তার ওপর সমাধি বানাত। এগুলি ডলমেন (দুটি খাড়া প্রস্তরের ওপর লম্বা করে রাখা বিশাল চেপটা প্রস্তর খন্ড) এবং মেনহার (স্মৃতিস্তম্ভ সূচক প্রাচীন দন্ডায়মান প্রস্তর) বলে পরিচিত ছিল।
• নব্য প্রস্তর যুগে মানুষরা গুহায় বাস করত। যে গুহাগুলির দেওয়াল মসৃন ছিল এবং নৃত্য ও শিকারের ছবি দিয়ে চিত্রিত ছিল।
• কাশ্মীরে কেউ মারা গেলে তার পােষা কুকুরকে লােকটির সাথে কবর দেওয়া হত।
✓ নব্য প্রস্তর যুগের অস্ত্র
• অস্ত্রগুলি সবদিক থেকে পালিশের চিহ্ন ছিল অথবা শুধুমাত্র তলদেশ ও কাঠের প্রান্তে পালিশের চিহ্ন থাকত। তারা তাদের অস্ত্রগুলিকে নানারকম ভাবে আকর্ষক করে তুলেছিল। ডিয়ােরাইট, ব্যাসাল্ট, স্লেট, ক্লোরাইট, শিস্ট স্তরে বিন্যস্ত শিলাবিন্যাস, গেনিস, বেলেপাথর ও কোয়ার্টজাইট ব্যবহৃত
✓জীবিকা
• নব্য প্রস্তর যুগের লােকেরা গবাদি পশু প্রতিপালন ও কৃষিকাজ করত। তারা রাগী, গম, বার্লি, ধান, মসুর, মুগ, কুলাঠী উৎপাদন করত। মৃৎপাত্রগুলি পাওয়া যেতাে প্রথম পর্যায়ের দিকে।
• হাতী, গন্ডার, মহিষ, ষাঁড়, পুরুষ হরিণ - এগুলির অবশেষ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেছে। কিন্তু এগুলি গৃহপালিত ছিল। কিনা, সে ব্যাপারে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি। মৃৎপাত্রগুলি ভালাে ভাবেই তৈরী ছিল। একটু মােটা ছিল কিন্তু খুব বেশী মসৃণ ছিল না।
• অস্ত্রশস্ত্র তৈরী করা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জীবিকা ছিল। ঘষিবার যন্ত্র ভোঁতা মােটা সূচ, সূচ ছিদ্র করা, বােতাম লাঠি ইত্যাদি অস্ত্র হিসেবে তৈরী হত।
✓ চ্যালকোলিথিক যুগ (2800-700 খ্রীষ্টপূবাব্দে) (CHALCOLITHIC CULTURE)
• ধাতুর ব্যবহার নব্য প্রস্তর যুগের শেষ দিকে শুরু হয়। প্রথম ব্যবহৃত ধাতুটি হল তামা এবং এই সংস্কারকে বলা হয় চ্যালকোলিথিক সংস্কৃতি (এই যুগ ইরিলিথিক যুগ’ নামেও পরিচিত)।
• প্রথমদিকে এই যুগে ছােটনাগপুর মালভূমি থেকে গঙ্গা নদীর উচ্চ অববাহিকা পর্যন্ত লােকজনের বসতি ছিল। কিছু বসতি মাইসােরের নিকট ব্রহ্মগিরি ও নর্মদার উপরে নাবাদা টলিতেও ছিল।
• প্রস্তরের ব্যবহার থেকে ধাতুর ব্যবহারে চলে যাওয়ার পরিবর্তনটি অনেকদিন ধরে বেশ ধীরগতিতে হয়েছিল। এই ব্যবহারে কোন সন্দেহ নেই যে এমন একটি সময়ও ছিল যখন প্রস্তর ও ধাতু একত্রে ব্যবহৃত হত।
• এই ব্যাপারটি প্রমাণিত হয় যখন ধাতব অস্ত্র ও প্রস্তরের অস্ত্রের মধ্যে সাদৃশ্য দেখা যায়। চ্যালকোলিথিক (অর্থাৎ তাম্র ব্রোঞ্জ যুগ অথবা প্রস্তর তাম্র যুগ) যুগে ভারতবর্ষে সিন্ধু উপত্যকায় গৌরবময় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, যা কাছাকাছি জায়গাতেও বিস্তৃত হয়েছিল।
✓ চালকোলিথিক যুগের বসতির বিন্যাস
•সবচেয়ে বৃহত্তম বসতি ঃদাইমাবাদ (প্রভারা নদীর বাম তীরে অবস্থিত)।
• দাইমাবাদ ও ইনামগাঁওতে নগর সভ্যতার বৈশিষ্ট্য ছিল। ইনামগাঁওতে নগর সভ্যতার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
• নাগাড়া, ইনামগাঁও, দাইসাবাদ, বালাথাল-এ দুর্গ তৈরী করা হয়েছিল।
• পোঁড়া হঁটের প্রমাণ পাওয়া গেছে—গিলুন্দ
• প্রধানত বৃত্তাকার ও আয়ত ঘনকার বাড়ির হদিশ পাওয়া গেছে।
• পাথরের বাসস্থান -আহার নামক জায়গা।
• মাইক্রোলিথ আহার থেকে পাওয়া গেছে।
• চ্যাপ্টা আয়তঘনাকার তাম্র কুঠার জোরওয়ে ও চান্দলী থেকে পাওয়া গেছে।
• মুখ্য ফসল - বার্লি (যব)।
• ইনামগাঁওতে ধান চাষের প্রমান পাওয়া গেছে।
• আগুনের যজ্ঞবেদী ও আগুন নিয়ে পূজা অতি প্রচলিত ছিল।
• আভ্যন্তরিক সমাধির ব্যবস্থা ছিল।
• উত্তর – দক্ষিণ দিক করে সমাধিস্থ করণ করা হত।
• পূর্ব-পশ্চিম দিক করে সমাধিস্থকরণের প্রচলন দক্ষিণ ভারতে ছিল।
• জীবিকা ঃ কৃষিকার্য চাষের ক্ষেত্রে গবাদি পশু জন্মানাে, শিকার ও মাছ ধরাই চ্যালকোলিথিক যুগের লােকেদের জীবিকা ছিল। তাদের অস্ত্রগুলিতে একটি বিশেষ ধরণের ছুরির ফলা থাকত এবং শ্বেতবর্ণ বা নীলচে-সাদা প্রস্তর বিশেষেরও চার্টের আঁশ থাকত। তাম্র ও ব্রোঞ্জের অস্ত্র খুব সীমিত সংখ্যায় পাওয়া যেত।
• চ্যালকোলিথিক যুগের লােকেরা প্রথম রং করা মৃৎপাত্র ব্যবহার করত। কালাে ও লাল রঙের মৃৎপাত-র মধ্যে সাদা লাইনের (পংক্তির) নক্সার প্রচলন ছিল।
Dada ancient er qus kothai????? Sudhu details alochona ache to... Qus dakhte parchi na to
ReplyDeleteGood work
ReplyDelete