Breaking







Saturday, 29 May 2021

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে গান্ধীজীর আবির্ভাব সম্পূর্ণ বিস্তারিত আলোচনা ।Gandhiji's appearance in India's freedom struggle.


প্রিয় বন্ধুরা

আধুনিক ভারতের ইতিহাসে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এই চ্যাপ্টার থেকে আমরা প্রতিনিয়ত পরীক্ষামূলক পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতে দেখে থাকি। তাই এই চ্যাপ্টারটি সম্পূর্ণ বিবরণ এর সাহায্যে আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম যেখানেই মহতমা গান্ধীর আগমন থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত সম্পূর্ণ পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ নিচে দেওয আছে।


 ✍️আফ্রিকায় গান্ধীজীরআবির্ভাব:

• ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে ২রা অক্টোবর গুজরাটের প্রাদেশিক রাজ্য কাথিয়াবারের পােরবন্দর শহরে মােহনদাস করমচঁদ গান্ধী ও জন্মগ্রহণ করেন।

• ইংল্যান্ডে আইন পরীক্ষায় সাফল্যের পর ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ফেরেন।

• তিনি মুম্বাই ও রাজকোটে আইনব্যবস্থায় ব্যর্থ হয়েছিলেন। • ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নাতাল শহরে দাদা আবদুল্লার হয়ে আইনজীবী হিসাবে মামলা লড়ার জন্য গমন করেন।

• দক্ষিণ আফ্রিকায় কর্মসূত্রে আগত এশীয় মহাদেশের শ্রমিকদের উপর বর্ণবিদ্বেষী নিপীড়ন লক্ষ্য করেছেন। 

• তিনি ভারতীয় শ্রমিকের অধিকার অর্জনের সংগ্রামকে সংগঠিত করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

• ১৯১৪ সাল অবধি তিনি সেইখানে বাস করেন পরে জানুয়ারী ১৯১৫ সালে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

•গান্ধীজীরভারতেপ্রত্যাবর্তন:

• 1915 সালের জানুয়ারী মাসে গান্ধীজী ভারতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি কোন রাজনৈতিক দলে যােগদান করেন নি। কারণ কোন রাজনৈতিক দলই তার অহিংস সত্যাগ্রহের উপর বিশ্বাস রাখতে পারেনি।

• 1917 থেকে 1918 সাল পর্যন্ত তিনি তিনটি সংগ্রামে লিপ্ত হন।


✓ চম্পারণ সত্যাগ্রহ (1917) (প্রথম আইন অমান্য আন্দোলন):

       বিহারের চম্পারণে নীল চাষীদের সমস্যা অনুসন্ধান করার জন্য রাজকুমার শুক্লা গান্ধীজীকে অনুরােধ করেন। ইউরােপীয় আবাদি জমির মালিকরা চাষীদের মােট জমির 3/20 অংশ নীল চাষ করতে বাধ্য করেন। একে তিন কাঠিয়া পদ্ধতি বলা হয়।

• ১৯ শতকের শেষের দিকে, জার্মানির সিন্থেটিক ডাই এই নীলকে প্রতিস্থাপিত করে।

• একটি ফসল থেকে অন্য ফসলের চাষে পরিবর্তনের আগে ইউরােপীয় জমির মালিকরা তাদের লভ্যাংশ বাড়ানাের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে প্রচুর ভাড়া এবং অনৈতিক পাওনা দাবী করল ঠিক চাষের ফসল পরিবর্তন করার পূর্বে।

• ইহা ছাড়াও ইউরােপীয় বণিকদের ধার্য করা দামে কৃষকদের উৎপাদিত শস্য বিক্রি করতে বাধ্য করা হল।

• যখন গান্ধীজী বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য চম্পারণে পৌঁছলেন, কর্তৃপক্ষ তাহাকে সত্বর স্থান ত্যাগ করার আদেশ দিলেন।

• গান্ধীজী ঐ আদেশ উপেক্ষা করে শাস্তির সম্মুখীন হলেন।

• (একটি অন্যায় আদেশের বিরুদ্ধে) ঐ ধরনের নিষ্ক্রিয় প্রতিরােধ বা আইন অমান্য আন্দোলন সেকালে একটি আদর্শ পদ্ধতি ছিল।

• পরিশেষে কর্তৃপক্ষ পিছু হটলেন এবং গান্ধীজীকে তদন্ত করার অনুমতি দিলেন।

• এই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সরকার একটি কমিটি গঠন করে গান্ধীজীকে ঐ কমিটির একজন সদস্য হিসাবে মনােনীত করলেন।

• এই মধ্যে উদ্যোগকারীগণ ঐ অঞ্চল ছেড়ে গেলেন।

• গান্ধীজী কর্তৃপক্ষকে এটা বােঝাতে সক্ষম হলেন যে তিনকাটিয়া পদ্ধতি উঠিয়ে দিতে হবে এবং কৃষকদের নিকট হতে আদায়কৃত অন্যায্য পাওনার জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

• উদ্যোগকারীদের সহিত সমঝােতার ফলে গান্ধীজী ২৫% টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে মিটিয়ে দেবার প্রস্তাবে সম্মত হলেন।


✓ আমেদাবাদ বস্ত্র কারখানা ধর্মঘট (1918) প্রথম অনশন ধর্মঘট:

• সংক্রামক মহামারী ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে মিল মালিকদের সহিত শ্রমিকদের বিরােধ সংক্রান্ত বিষয়ে গান্ধীজী হস্তক্ষেপ করলেন।

• গান্ধীজী শ্রমিকদের মজুরী ৩৫% বৃদ্ধি করার দাবীতে ধর্মঘট চালিয়ে যেতে আবেদন করলেন।

• কিন্তু কর্তৃপক্ষ মাত্র ২০% বৃদ্ধির জন্য আগ্রহ দেখালেন

 • গান্ধীজী শ্রমিকদের অহিংস পথে ধর্মঘট করার পরামর্শ দিলেন।

• তিনি শ্রমিকদের দাবীকে জোরদার করার জন্য আমৃত্যু অনশনে যােগ দিলেন।

• অবশেষে মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকের মজুরী ৩৫% বৃদ্ধিতে সম্মত হলেন।


✓ খেদা সত্যাগ্রহ (1918) (প্রথম অসহযােগ আন্দোলন):

• গুজরাটের খেদা জেলায় ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে খরার দরুন শস্য উৎপাদন শূন্য হয়ে যায়।

• রাজস্ব আইন অনুসারে যদি ফসলের স্বাভাবিক উৎপাদনে ১/৪ অংশের নীচে দাঁড়ায়, কৃষকেরা রাজস্ব থেকে রেহাই পেয়ে থাকেন।

• কিন্তু কর্তৃপক্ষ কর ছাড় দিতে অসম্মত হন।

• গান্ধীজী কৃষকদের সমস্যাকে সমর্থন করেন এবং রাজস্ব দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

• কর্তৃপক্ষ কিন্তু কৃষকদের দাবী-দাওয়ায় প্রকাশ্যে সম্মত না হয়ে পৃথক গােপন আদেশ দেন যে সংগতিসম্পন্ন ব্যক্তিরা রাজস্ব জমা করতে পারবেন।

• খেদা সত্যাগ্রহ চলাকালীন, অনেক যুবা জাতীয়তাবাদী যেমন সর্দার প্যাটেল এবং ইন্দুলাল যাজ্ঞিক গান্ধীজীর অনুগামী হলেন।


✓ ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে মন্ডেগুচেক্সফোর্ডসংস্কার আন্দোলন—ভারত সরকারের আইন (1919) :

• প্রদেশগুলিতে ‘ডায়ার্চি’ (Dyarchy) প্রথার সূচনা হয়।

• প্রাদেশিক বিষয়গুলি সংরক্ষিত বিষয়ে রূপান্তরীত হয়। যথা—পুলিশ, জেল, ভূমি-রাজস্ব, জলসেচ এবং বনভূমি। এছাড়াও স্থানন্তরীত বিষয়গুলি হল—শিক্ষা, স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসিত সরকার, জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা, জঙ্গল সাফাই, কৃষি ও শিল্প।

• সংরক্ষিত বিষয়গুলি শাসন করেন গভর্নর এবং তার কার্যনির্বাহী পরিষদ।

• স্থানান্তরীত বিষয়গুলি শাসন করেন গভর্নর এবং তার মন্ত্রীসভা।

• কেন্দ্রে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা এবং রাজ্যে বিধান পরিষদ (৬০ জন সদস্যবিশিষ্ট) ও বিধানসভা (১৪৫ জন সদস্যবিশিষ্ট) গঠিত হয়।

* এখানের বিধায়কেরা প্রশ্ন তুলতে পারেন এবং কোন তথ্যের সম্পূরক তথ্য দিতে পারেন, আইন পাশ হবার পূর্বে তাকে মুলতুবি করে রাখতে পারেন। বাজেটের একটা অংশতে তারা ভােটও দিতে পারতেন। কিন্তু ৭৫% বাজেটে তখনও ভােট দানের আইন ছিল না।

• ব্রিটিশদের আদায়কৃত রাজস্ব থেকে রাজ্যের সেক্রেটারী ও তার সহায়কদের বেতন দেওয়া হত।

• ভাইসরয়ের কার্যনির্বাহী পরিষদ ৮ জন সদস্যদের মধ্যে বর্ধিত করা হয়। যাদের মধ্যে ৩ জন সদস্য ভারতীয় ছিল। লন্ডনে ভারতের জন্য একজন হাই কমিশনার নিযুক্ত করা হয়েছিল।

• এই আইনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ডায়ার্চি প্রথার মাধ্যমে প্রদেশগুলিতে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া।

• মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কারে ভারতের নিষেধাজ্ঞা • কোন নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়নি।

• এর প্রকৃতি কেমন হবে তা শুধুমাত্র সরকার নির্ধারণ করবে।

• এতে ভারতীয়রা ক্ষুব্ধ হয়েছিল কারণ এতে ভারতীয়দের জন্য কোনটা ভাল কোনটা খারাপ সেটা ব্রিটিশরা সিদ্ধান্ত নিত।


রাওলাট আইন (1919) প্রথম গণআন্দোলন: 

        যখন জাতীয়তাবাদীরা যুদ্ধের পরবর্তীকালে সাংবিধানিক সুযােগ সুবিধার প্রত্যাশা করছিলেন ঠিক সেই সময়ে ব্রিটিশ সরকার দমনমূলক রাওলাট আইন নিয়ে আসে, যেটা জাতীয়তাবাদীদের কাছে একটা অপমান ছাড়া কিছু ছিল না। ইহাকে কালাে আইন (Black Act)-ও বলা হত।

* ইহার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধরত জাতীয়তাবাদী ক্রিয়াকলাপ অনুসন্ধান করা।

• সন্দেহের বসে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা যাবে।

• এইরূপ গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২ বছরের মধ্যে কোনরূপ আবেদন বা দরখাস্ত করা যাবে না।

• ১৯১৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে গান্ধীজী এক সাৱা দেশব্যাপী প্রতিবাদের ডাক দেন।

• কিন্তু শীঘ্রই দেখা গেল যে সাংবিধানিক প্রতিবাদ অসফল হয়। গান্ধীজী এক সত্যাগ্রহ সভার আয়ােজন করেছিলেন এবং সমগ্র ইসলামিক দল ও হােম রুল লিগের দায়িত্বভার যুবক সদস্যদের হাতে তুলে দিলেন।

• শেষ পর্যন্ত প্রতিবাদের যে পদ্ধতিটি নির্বাচন করা হল তার মধ্যে আছে সারা দেশব্যাপী ‘হরতাল’ (Strike) সঙ্গে উপবাস ও প্রার্থনা এবং কারাদণ্ড, গ্রেপ্তার ও কিছু নির্দিষ্ট আইনের বিরুদ্ধে আইন অমান্য।

• এই পরিস্থিতিতে ভারতে আমূল পরিবর্তন দেখা গেল

• জনগণ: নির্দিষ্ট দিক খুঁজে পেল। তারা তাদের অভিযােগগুলির মৌখিক অভিব্যক্তি ত্যাগ করে ক্রিয়াকলাপে নিযুক্ত হল।

• এর পর থেকে কৃষক, কারিগর এবং শহরের দরিদ্র শ্রেণীর লােকেরা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে লাগলেন।

• জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ঝোক স্থায়ীভাবে জনগণের মধ্যে চেপে বসল।


✓ জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড (13ই এপ্রিল, 1919)

• পাঞ্জাবে, এই রাওলাট সত্যাগ্রহের অতুলনীয় সমর্থন পাওয়া গেল।

• একটি হিংসাত্মক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে সরকার প্রশাসনিক পরিচালনার দায়িত্ব জেনারেল ডায়ারের সামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হল।

• ডায়ার সমস্ত জনসমক্ষে আয়ােজিত সভার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিল এবং রাজনৈতিক নেতাদের আটক করেছিল।

* বৈশাখ মাসের প্রথমদিন, এক বিশাল জনস্রোত প্রতিবেশী গ্রাম থেকে এসে জালিয়ানওয়ালাবাগের একটি ছােট মাঠে জমায়েত হয়ে তাদের নেতা ডঃ সত্যপাল ও ডঃ সইফুদ্দিন কিচলেউ-এর গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু তারা ঐ শহরের নিষেধাজ্ঞার আদেশ সম্পর্কে

• জেনারেল ডায়ারের আদেশে সেনাবাহিনী, জমায়েত হওয়া জনগণকে চারিদিক দিয়ে ঘিরে ফেলে।

• তারা মাঠ থেকে বেরােনাের রাস্তা বন্ধ করে দেয় এবং নিরস্ত্র জনগণের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়।


✓ ১৯১৯ সালের গুরুত্ব •

 ১৯১৯সালটি ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রেখে যায়।

০ রাওলাট বিল ও সন্ত্রাসের রাজত্ব পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডে এক চরম পরিণতি পায়।

• গান্ধীজীর উত্থান ঘটে।

• সমগ্র ইসলাম জাতির উন্নতি ভারতীয় রাজনীতিতে শক্তি বৃদ্ধি করে।

• মন্টেগু-চেমসফোর্ডের প্রতিবেদন অনুসারে ১৯১৯ সালে ভারত সরকার আইন (গভর্মেন্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট) পাস হয়।

• এর ফলাফল হিসাবে সারা দেশব্যাপী এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদের ঝড় ওঠে এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিবাদ হিসাবে তার নাইট উপাধী ফিরিয়ে দেন।

• গান্ধীজী এইরূপ হিংসাত্মক বাতাবরণে বিচলিত হয়ে যান এবং ১৯১৯ সালের ১৮ই এপ্রিল রাওলাট সত্যাগ্রহ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।


খিলাফত আন্দোলন (1920-22):

• ১৯২০ সালে সেভ্রের চুক্তিতে কিছু কঠোর মন্তব্য ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুর্কির পরাজয় হল এই আন্দোলনের প্রধান কারণ।

• এই চুক্তির শর্তগুলি মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত অপমানজনক বলে বিবেচিত হয়।

• সমগ্র আন্দোলনটি মুসলিমদের বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে সংগঠিত হয়েছিল, যে খলিফা (তুর্কির সুলতান) ছিলেন সারা বিশ্বে মুসলিমদের প্রধান, তার পরাজয় তাদ্রেদরকে আন্দোলনে নামতে বাধ্য করেছিল।

• মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, এম. এ. আনসারী, সৈফুদ্দিন কিচলেউ এবং আলি ভাইরা এই আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন।

• পরবর্তীকালে ১৯২০ সালে মহাত্মা গান্ধীর অসহযােগ আন্দোলনের সঙ্গে খিলাফৎ আন্দোলন যুক্ত হয়ে যায়।


✓ অসহযােগ আন্দোলন (1920-22):

• রাওলাট আইন, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ও খিলাফৎ আন্দোলনের পরিণাম স্বরূপ ১৯২০ সালের ১লা আগষ্ট তারিখে এই অসহযােগ আন্দোলন শুরু হয়।

• ১৯২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নাগপুর অধিবেশনে ইহা অনুমােদিত হয়। এই অধিবেশনটি ছিল একই বছরে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশন।

• অসহযােগ আন্দোলনের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলি হল

• ব্রিটিশদের দেওয়া উপাধি ত্যাগ করে মহাত্মা গান্ধী এই আন্দোলনের সূচনা করেন।

• এর মধ্যে পড়ে উপাধি সমর্পণ করা এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করা।

• ১৯১৯ সালে আইনের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন বয়কট করা হয়।

• আইনসভা বয়কট করা হয়। আইনসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের কোন নেতা এগিয়ে আসেনি।

• সরকারী অনুষ্ঠান, আদালত, সরকারী বিদ্যালয় ও কলেজ এবং বিদেশী দ্রব্য পরিহার করা হয়।

• বেসরকারী জাতীয় বিদ্যালয়, কলেজ ও পঞ্চায়েত আদালত সৃষ্টি করা হয়।

• স্বদেশী দ্রব্য এবং খাদি’ জনপ্রিয় হয়। • শীর্ষস্থানীয় পয়েন্ট

• কৃষক, ছাত্র, মহিলা ও মুসলিমরা এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যােগদান করেন।

• বিদেশী কাপড়ে অগ্নিসংযােগ করা হয়।

• এই আন্দোলনের সময় হিন্দু-মুসলিম ঐকতা গড়ে ওঠে, যার ফল স্বরূপ খিলাফত আন্দোলনের এই আন্দোলনের সঙ্গে সংযােগ।

• ১৯২১ সালে ওয়েলসের রাজপুত্র ভারতবর্ষে এলে তার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ দেখা দেয়।

• অনেক নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং কংগ্রেস ও খিলাফত কমিটিকে নিষিদ্ধ বলে ঘােষণা করা হয়। 

• কিন্তু ১৯২২ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী, গান্ধীজী এই বিদ্রোহ সম্পূর্ণরূপে বাতিল করেছিলেন। এর কারণ হল, এই সময় উত্তরপ্রদেশের গােরক্ষপুর জেলার চৌরি চৌরা ঘটনার জন্য, যেখানে ২২ জন পুলিশ কর্মী আগুনে পুড়ে মারা যান।

• ১৯২২ সালের মার্চ মাসে গান্ধীজীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার ৬ বছরের জেল হয়। কিন্তু ১৯২৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বরদৌলি থেকে স্বাস্থ্য খারাপ থাকার জন্য জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।


✓ চৌরি-চৌরা ঘটনা (1922):

• ১৯২২ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী গােরক্ষপুরের কাছে চৌরি-চৌরায় উচ্ছঙ্খল জনতা পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধের জড়িয়ে পড়েন এবং এতে ২২ জন পুলিশ কর্মী জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান।

• এই ঘটনার জেরে ১৯২২ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী বরদৌলিতে গান্ধীজী বাধ্য হয়ে অসহযােগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।


No comments:

Post a Comment







Twt
D1 Study Subscribe our Youtube Channel
Subscrib