Breaking







Friday, 30 April 2021

গণপরিষদ ও সংবিধান রচনার ইতিহাস।History of Constituent Assembly and constitution writing.

 




প্রিয় বন্ধুরা

      আজকে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব গণপরিষদ ও সংবিধান রচনার ইতিহাস।  এই গণপরিষদ ও সংবিধান রচনার ইতিহাস চ্যাপ্টারের উপর থেকে প্রতিনিয়ত আমাদের  এক্সাম এ প্রশ্ন এসে থাকেে। তাই এই চ্যাপ্টার থেকে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সেগুলো আপনাদের কাছে রাখলাম।


✍️ গণপরিষদ 

      একটি রাষ্ট্র যে যে মৌলিক শর্তের ভিত্তিতে চালিত হবে সেই শর্তগুলির একত্র সংকলনকে সংবিধান বলা হয়। প্রত্যেকটি সভ্য দেশের সংবিধানে রাষ্ট্রের শাসনতান্ত্রিক কাঠামাে, প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং তাদের মুখ্য পদাধিকারীদের ভূমিকা, ক্ষমতা, দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতার বিস্তারিত বিবরণ থাকে।ব্রিটেন ছাড়া বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান আছে।

ভারতীয় সংবিধান সারা বিশ্বের লিখিত সংবিধানগুলির মধ্যে আয়তনে বৃহত্তম।সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় (26 নভেম্বর, 1949) এটিতে ছিল 22টি পার্ট, 395টি অনুচ্ছেদ এবং ৪টি তফশিল। বর্তমানে ভারতীয় সংবিধানে আছে 22টি পার্ট, 448টি অনুচ্ছেদ এবং 12টি তফশিল।


গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসারে একটি দেশের শাসনব্যবস্থার কাঠামো সংক্রান্ত বিধিনির্দেশিকা সেই দেশের অধিবাসীদের দ্বারা রচিত হওয়া উচিত। কিন্তু সমগ্র দেশবাসীর পক্ষে সংবিধান রচনার কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাই সংবিধান প্রণয়নের কাজে দেশবাসীর প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজনকে নিয়ে একটি সংস্থা গঠন করা হয়। এই সংস্থাকে গণপরিষদ (Constituent Assembly) বলা হয়।


✍️গণপরিষদ গঠন;- 1946 সালে ভারতে আগত ক্যাবিনেট মিশনের প্ল্যানের ভিত্তিতে ভারতের গণপরিষদ গঠিত হয়েছিল। ক্যাবিনেট মিশনের যে চারটি মূলনীতির উপর ভিত্তি করে গণপরিষদ গঠনের কথা হল হয়েছিল সেগুলি হল—

(১) প্রত্যেক প্রদেশ ও দেশীয় রাজ্য তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতি দশ লক্ষ জনতার জন্য গণপরিষদে একটি আসন পাবে। প্রদেশগুলির আসনসংখ্যা হবে 292টি এবং প্রিন্সলি স্টেটগুলির আসনসংখ্যা হবে সর্বাধিক 93টি।

(২) প্রত্যেক প্রদেশের আসনসংখ্যা সাধারণ, মুসলিম ও শিখ এই তিন সম্প্রদায়ের মধ্যে জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে বিভক্ত হবে।

(৩) প্রত্যেক সম্প্রদায়ের সদস্যগণ একক হস্তান্তরযােগ্য সমানুপাতিক ভােটাধিকারের (Single Transferable Proportional Votes) ভিত্তিতে প্রাদেশিক আইনসভাগুলির থেকে নিজ নিজ প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করতে পারবে।

(৪) প্রিন্সলি স্টেটগুলি থেকে প্রতিনিধি মনােনয়নের পদ্ধতি আলাপ আলােচনার মাধ্যমে স্থির হবে।


✍️ক্যাবিনেট মিশনের প্ল্যান অনুসারে, 1946 সালের জুলাই মাসে গণপরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রদেশগুলি থেকে নির্বাচিত 292 জন প্রতিনিধি এবং প্রিন্সলি স্টেটগুলি থেকে নির্বাচিত 93 জন প্রতিনিধি নিয়ে ভারতের গণপরিষদ গঠিত হয়। 1946 সালের ৯ ডিসেম্বর দিল্লির কনস্টিটিউশন হলে গণপরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।


✍️26 জানুয়ারি তারিখটিকে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস হিসাবে নির্বাচনের কারণ: 1929 সালে, লাহােরে জওহরলাল নেহরুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্যরূপে স্বায়ত্তশাসনের পরিবর্তে পূর্ণ স্বরাজের দাবি গৃহীত হয়। সেই অধিবেশনে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, পরের বছর থেকে প্রত্যেক বছর 26 জানুয়ারি দিনটিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বে সারা ভারত জুড়ে স্বাধীনতা দিবসরূপে পালন করা হবে। 1930 সাল থেকে 1947 সাল অবধি, প্রত্যেক বছর, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস 26 জানুয়ারি দিনটিকে ভারতের স্বাধীনতা দিবসরূপে পালন করত।


✍️26 জানুয়ারির এই ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে, 1950 সালের এই দিনটিতেই ভারতীয় সংবিধান কার্যকর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


✍️গণপরিষদের কয়েকজন বিশিষ্ট সদস্যের নাম: গণপরিষদের কয়েকজন বিশিষ্ট সদস্য ছিলেন 

(১) সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল  

(২) জওহরলাল নেহরু 

(৩) ড. বি আর আম্বেদকর 

(৪) মৌলানা আবুল কালাম আজাদ (৫) কে এম মুন্সী 

(৬) তেজবাহাদুর সাপু 

(৭) রাজাগােপালাচারি 

(৮) কে শান্তারাম 

(৯) স্যার কৃয়স্বামী আইয়ার 

(১০) এস রাধাকৃয়ন


✍️গণপরিষদের খসড়া কমিটির সদস্যগণ : বি আর আম্বেদকর (চেয়ারম্যান), স্যার কৃয়স্বামী আইয়ার, এন গােপালাস্বামী আয়েঙ্গার, কে এম মুন্সী, সৈয়দ মহম্মদ শাহদুল্লা এবং ডি পি খৈতান। পরবর্তীকালে বি এল মিত্রের সদস্যপদ বাতিল হওয়ার পর সেই পদে নির্বাচিত হন এন মাধব রাও এবং ডি পি খৈতানের মৃত্যুর পর তার স্থলে টি টি কৃয়মাচারী নির্বাচিত হন।


✍️সংবিধান রচনা ব্যতিরিকে গণপরিষদের কৃত কার্যাবলি : ভারতীয় সংবিধান রচনার জন্য গণপরিষদ গঠিত হলেও ভারতের রাজনৈতিক স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর থেকে প্রথম লােকসভা গঠন পর্যন্ত গণপরিষদকে কার্যনির্বাহী সংসদরূপে সংবিধান রচনা ব্যতিরিকে অন্যান্য বহু লেজিসলেটিভ দায়িত্বপালন করতে হয় যার মধ্যে অন্যতম ছিল—

(১) 1947 সালের 22 জুলাই, গণপরিষদ কর্তৃক স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকার নকশা মঞ্জুর ও গ্রহণ করা হয়। (পতাকাটির নকশা তৈরি করেছিলেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া নামক অপ্রদেশের এক বাসিন্দা)।

(২) 1949 সালের মে মাসে, কমনওয়েলথ অক্ নেশনসে ভারতের সদস্যপদ প্রাপ্তি অনুমােদিত হয়। 

(৩) 1950 সালের 24 জানুয়ারি, ভারতের জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় স্তোত্র গৃহীত হয়। 

(৪) 1950 সালের 24 জানুয়ারি, স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি

হিসেবে ড. রাজেন্দ্র প্রসাদকে নির্বাচন করা হয়।

4 comments:







Twt
D1 Study Subscribe our Youtube Channel
Subscrib