✍️ আইন অমান্য আন্দোলন (1930):
• এইসব দাবীর ক্ষেত্রে সরকারের কাছে কোন অনুকুল প্রতিক্রিয়া না পেয়ে কংগ্রেস কার্যনির্বাহক কমিটি গান্ধীজীকে সম্পূর্ণ ক্ষমতার সাথে আইন অমান্য আন্দোলন করতে বললেন।
• আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করার আগে লাহাের কংগ্রেসে দেওয়া আদেশকে অগ্রগামী করতে গান্ধী সরকারের কাছে এগারাে দফা দাবী সরকারের কাছে পেশ করেন এবং 1930 সালের 30শে জানুয়ারী পর্যন্ত সময় দেন। এই দাবিগুলি গ্রহণ অথবা বর্জন করতে।
• সৈন্য ও সিভিল সার্ভিস-এর ব্যয় পঞ্চাশ শতাংশ হ্রাস করা।
• সম্পূর্ণ নিষিদ্ধকরণ।
• অপরাধী অনুসন্ধান দপ্তরের সংস্কার আনা।
• অস্ত্র আইন পরিবর্তন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুসারি
দানের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ।
• রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি
• ডাকবিভাগে সংরক্ষণ বিলের গ্রহণ
•রুপি পাউন্ডের পরিবর্তনের অনুপাত হ্রাস।
• কার্পাস বস্ত্রের রক্ষা।
• উপকূলে জাহাজে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতীয়দের সংরক্ষণ।
• ভূমি কর পঞ্চাশ শতাংশ হ্রাস করা।
• লবণ কর এবং সরকারের একচেটিয়া লবণ বাজারের বিলােপ।
✍️ ডান্ডি মার্চ (12-6ই মার্চ এপ্রিল, 1930):
• গান্ধীজী আমেদাবাদের সবরমতী আশ্রম থেকে 78 সদস্যবিশিষ্ট একটি দলের সাথে গুজরাটের গ্রামে মধ্যদিয়ে 240 মাইল পথে যাত্রা করে। এই ঐতিহাসিক পদযাত্রা। আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করে যা শুরু হয় 12ই মার্চ এবং গান্ধীজী ই এপ্রিল ডান্ডিতে একমুঠো লবণ হাতে তুলে নিয়ে লবণ আইন ভঙ্গ করলেন। গান্ধীজী ভবিষ্যতের কর্মের জন্য নিম্নলিখিত নির্দেশগুলি দিলেন।
• যেখানেই সম্ভব, লবণ আইন-এর অমান্য শুরু করতে হবে
• বিদেশী মদ, বস্ত্র, দোকান প্রভৃতিতে বাধা দান। • কর দিতে অস্বীকা
• আইনজীবীরা ওকালতি ত্যাগ কর
•জনগণ কোর্টকে বয়কট করতে পারে মকদ্দমা থেকে বিরত থেকে
• সরকারী কর্মীরা তাদের পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারে। • এই সমস্ত কিছু একটি শর্তেই হবে—সত্য ও অহিংসা স্বরাজ অর্জনের উপায় এবং বিশ্বস্তভা
• গান্ধীজীর গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় নেতাদের মান্য করা হবে
• লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন তামিলনাড়ুতে সি. রাজা গােপালাচারীর এবং মাল্যবারে আইকস সত্যাগ্রহের নায়াব কে. কালাপানির দ্বারা হ
• উত্তর-পশ্চিমে খান-আব্দুল গফফর খানের (ফ্রন্টিয়ের গান্ধী) অধীনে পাঠান বাহিনী খােদাই খিদমদগরের (লাল কোর্তা বাহিনী) গঠন করে
✓ আইন অমান্য আন্দোলপ্রসার:
নেহেরু ও গান্ধীজীকে নিয়ে প্রচুর জাতীয়তাবাদী নেতা গ্রেপ্তার হন। তাদেরকে ইয়েরাভাদা জেলে বন্দী করেন। এর ফলে সারা ভারতে ব্যাপক বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে।
√আন্দোলনের প্রভাব:
• বিদেশী পােশাক ও অন্যান্য দ্রব্যের আমদানির পত্তন ঘটল।
• মদ কর, ভূমি কর থেকে সরকারের আয় কমল। • আইনসভায় নির্বাচন বিরাট অংশে বয়কট করা হল। • সমাজের প্রতিটি অংশ, ছাত্র, মহিলা, উপজাতি, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, তার সাথে রাজনৈতিক কর্মী সকলেই আইন অমান্য আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকরেছিল।
• মুসলিমরাও এর মধ্যে অংশগ্রহণ করেছিল কিন্তু তাদের যােগদান 1920-21-এর মত ছিল না কারণ মুসলিম নেতারা আন্দোলন থেকে দূরে থাকার আবেদন করেছিলেন এবং সরকারী অস্ত্র দায়িত্ব বিভাজনে উৎসাহ দিয়েছিলেন।
✍️ প্রথম গােল টেবিল বৈঠক (12ই নভেম্বর, 1930):
•এটি ব্রিটিশ ও ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম সমানে সমানেএকটি সম্মেলন।
• কংগ্রেস এবং বেশীরভাগ ব্যবসায়িক নেতা যেখানে প্রথম গােল টেবিল বৈঠক বয়কট করে। মুসলিম লীগ, হিন্দু মহাসভা, উদারপন্থীরা এবং রাজারা এখানে উপস্থিত হয়েছিল।
✍️ গান্ধী-আরউইন চুক্তি (5ই মার্চ, 1931)
1931-এর 25শে জানুয়ারী গান্ধীজী ও কংগ্রেস কার্যনির্বাহক কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নিঃশর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়। কংগ্রেস কার্যনির্বাহক কমিটি গান্ধীজীকে দয়িত্ব অর্পণ| করবেন ভাইসরয়দের সাথে আলােচনা শুরু করার জন্য, যা পরবর্তীকালে গান্ধী আরউইন চুক্তি বা দিল্লী চুক্তি রূপে পরিচালিত হল। আরউইন সরকারের তরফ থেকে রাজী হলেন
• রাজনৈতিক বন্দী যারা হিংসাত্মক কার্যকলাপের সাথে। যুক্ত নয় তাদের। ৎক্ষণাৎ মুক্তি।
• জরিমানা যেগুলি এখনাে সংগৃহীত হয়নি সেগুলি থেকে নিষ্কৃতি।
• যেসমস্ত জমি তৃতীয় কোন ব্যক্তিকে বিক্রিত হয়নি সেগুলি ফিরিয়ে দেওয়া।
• যেসমস্ত সরকারী কর্মী ইস্তফা দিয়েছে তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার।
• উপকূলবর্তী শহরগুলির তাদের ব্যক্তিগত প্রয়ােজনে লবণ তৈরীর অধিকার (বিক্রির জন্য নয়)।
• শান্তিপূর্ণ এবং আক্রমণবিহীন বাধা দান বিভিন্ন কাজে।
• জরুরি অধ্যাদেশগুলি প্রত্যাহার।
ভাইসরয় যাইহােক গান্ধীজীর দুটি প্রস্তাব বাতিল করলেন
• জনগণের পুলিশের কাজে জিজ্ঞাসাবাদ।
• ভগৎ সিং ও তার সঙ্গীদের ফাঁসির সাজা কমিয়ে যাবজীবন। সাজা দেওয়া।
* গান্ধীজী কংগ্রেসের হয়ে রাজী হলেন
• আইন অমান্য আন্দোলনের প্রত্যাহার।
• পরের গােল টেবিল বৈঠকে যােগদান।
• মুসলিম লিগকে প্রদর্শিত করলেন মহম্মদ আলি আগা খান, ফজলুল হক, এম.এ. জিন্না এবং হিন্দু মহাসভাকে মুঞ্জি এবং জয়াকার দিয়ে।
• তেগ বাহাদুর সাঞ, চিন্তামণি ও শ্রীনিবাস শাস্ত্রী (উদারপন্থী) যােগদান করেন।
• মহারাজা হায়দ্রাবাদ ও মহীশূরের উপস্থিত ছিলেন, সম্মেলন-এর ফল কিছু হল না।
•আম্বেদকর তপশিলী জাতি ও উপজাতির জন্য পৃথক নির্বাচনের দাবী করেন।
• সরকার আর কংগ্রেসের সাথে সন্ধিতে আসার মধ্যস্থ করে যাতে তারা গােল টেবিল বৈঠকে যােগদান করে।
•বামপন্থী বক্তা জয়কার, সা ও শ্রীনিবাস শাস্ত্রী চেষ্টা শুরু করলেন গান্ধী ও সরকারের মধ্যে বিবাদ মেটানাের। গান্ধী ও আরউইন এর মধ্যে ১ই মার্চ, 1931-এর দুই চুক্তি ‘গান্ধী আরউইন চুক্তি’ বা ‘ দিল্লী চুক্তি’-রূপে পরিচিত।
✍️ করাচী অধিবেশন (1931)
• 1931 সালের মার্চ মাসে করাচীতে বিশেষ অধিবেশন হয় গান্ধী আরউইন অথবা দিল্লী চুক্তিতে সই করার জন্য।
• দুটি সংকল্প যা এই অধিবেশনকে স্মরণীয় করেছিল, গ্রহণ করা হয়েছিল।
• একটি মৌলিক অধিকারের উপরে এবং
• অন্যটি হল জাতীয় অর্থনৈতিক অনুক্রম।
• এই প্রথম কংগ্রেস বৃহৎ জনগােষ্ঠীর কাছে স্বরাজের অর্থ উত্থাপন করলেন।
• করাচী প্রস্তাব কংগ্রেসের কাছে পরবর্তী বছরের জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তির মঞ্চ তৈরী করেছেন।
• এই অধিবেশনের ছয় দিন আগে ভগৎ সিং, সুখদেব, রাজগুরুকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় (23শে মার্চ, 1931)।
✍️ দ্বিতীয় গােল টেবিল বৈঠক (1931)
• দ্বিতীয় গােল টেবিল বৈঠক সেখানে 1931 সালের দিল্লীতে দিল্লী চুক্তির অনুযায়ী কংগ্রেস রাজী হয়েছিল উপস্থিত হতে।
•মহাত্মা গান্ধী বৈঠকে যােগদান করে হতাশ হয়ে ভারতে ফিরে আসেন।
• পূর্ণ স্বরাজের দাবী এবং সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে কোন সহমত-এ পৌঁছানাে গেল না।
• কংগ্রেস 1933 সালে সরকারীভাবে আন্দোলনটি করে নেয় এবং 1934 সালে প্রত্যাহার করে। গান্ধীজী নীতি থেকে ইস্তফা দেয়।
✓ ফলাফল
• 1932 সালে আইন অমান্য আন্দোলন পুনরায় শুরু হয়। • সরকার মহাত্মা গান্ধী এবং সর্দার প্যাটেলকে গ্রেপ্তারকরে।
• কংগ্রেস পার্টির ওপর পুনরায় নিষেধ আরােপিত হয়।
✍️ সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা:
• ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র্যামসে ম্যাকডােনাল্ড 1932-এর আগস্ট মাসে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘােষণা করেন।
• এটা ব্রিটিশ-এর বিভাগ ও শাসনের নীতি আরেক বহিঃপ্রকাশ।
•মুসলিম, শিখ, খ্রীষ্টানদের সংখ্যালঘু হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
• সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘােষণা করল অনুন্নত শ্রেণী,সংখ্যালঘু হবে এবং তাদের পৃথক নির্বাচনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
• সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির প্রতি গান্ধীজীর প্রতিক্রিয়া
• অনুন্নত শ্রেণীকে বাকী হিন্দুদের থেকে আলাদা করে তাদের জন্য পৃথক নির্বাচনের স্বীকৃতির সমস্ত জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা তীব্রভাবে বিরােধিতা করা হয়।
• গান্ধীজী দেখলেন সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ভারতীয়, ঐক্য ও জাতীয়তাবাদকে আক্রমণ।
• আবার অনুন্নত শ্রেণীকে পৃথক রাজনৈতিক গােষ্ঠী হিসাবে চিহ্নিত করা হলে তিনি যুক্তি দেখালেন অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ-এর প্রশ্নে গােড়ায় ক্ষয় হবে।
• পৃথক নির্বাচন অস্পৃশ্যদের চিরতরে অস্পৃশ্য রেখে দেবে, তিনি বললেন।
• গান্ধীজী দাবী করলেন যে অনুন্নত শ্রেণীতে যৌথ এবং যদি সম্ভব হয় সার্বজনীন ভােটাধিকার বিস্তৃত ও নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। যেখানে বৃহৎ সংখ্যার সংরক্ষিত আসনে এর দাবীর কোন রকম বিরােধিতা করলেন না। এই দাবীকে পূর্ণ করতে তিনি পুনরায় ইবাবাবা জেলে আমৃত্যু অনশন শুরু করলেন।
✍️ পুণা চুক্তি (1932):
• অবশেষে গান্ধীজী এবং ডঃ আম্বেদকর একটি সহমতে পৌঁছলেন, যাকে পুণা চুক্তি বলা হয়।
• এই অনুযায়ী অনুন্নত শ্রেণীর জন্য আসন সংরক্ষণ প্রাদেশিক আইনসভায় 71 বাড়িয়ে 147 করা হল এবং কেন্দ্রীয় আইনসভায় করা হল সম্পূর্ণ আসনের আঠারাে শতাংশ। \
• পুণা চুক্তিকে সরকার সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির এক সংশােধনী হিসাবে গ্রহণ করলেন।
✍️ তৃতীয় গােল টেবিল বৈঠক(17ই নভেম্বর - 24শে ডিসেম্বর, 1932) )
• 1932 সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়।
• কংগ্রেস এখানে যােগদান করেনি।
• 1933 সালে ব্রিটিশ সরকার একটি সরকারী ইস্তাহার প্রকাশ করে, যেটা বর্তীকালে ভারত শাসন আইন 1935 সালের ভিত্তি রচনা করা করেন।
• অবশেষে গান্ধীজী 1934 সালের এপ্রিল মাসে আইন অমান্য আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়।
•তেজ বাহাদুর সাঞ্জ তিনটি গােল টেবিল বৈঠকে যােগদান করে।
✍️ ভারত শাসন আইন, 1935
• ভারত শাসন আইন 1935 পাশ হওয়ার ভিত্তি ছিল।
• সাইমন কমিশনের রিপাের্ট।
• দ্বিতীয় গােল টেবিল বৈঠকের ফল।
• ব্রিটিশ সরকারের 1933 খ্রীষ্টাব্দে প্রকাশিত সরকারী ইস্তাহার।
• আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল
• কেন্দ্রে সর্বভারতীয় ফেডেরেশনের প্রতিষ্ঠা ব্রিটিশ ভারত এক দেশীয় রাজ্যগুলিকে নিয়ে।
• দেশীয় রাজ্যগুলি যুক্তরাষ্ট্রে যােগদান করতে অস্বীকার করলে এটা ফলপ্রসূ হবে না।
• ক্ষমতা বিভাজন তিনটে শ্রেণীতে হবে—কেন্দ্রীয়, প্রাদেশিক, যৌথ।
• কেন্দ্রে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা।
• গভর্ণর জেনারেল ও তার মন্ত্রী পরিষদের হাতে সংরক্ষিত বিষয়গুলি থাকবে।
• মন্ত্রীসভার হাতে হস্তান্তরিত বিষয়গুলির দায়িত্ব থাকবে।
• প্রদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা তুলে দিয়ে তার পরিবর্তে স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তন।
• প্রাদেশিক শাসনবিভাগ-এর প্রধান হবেন গভর্ণর এবং তিনি ইচ্ছা করলে (বাধ্য নন) তার মন্ত্রীসভার পরামর্শ নিয়ে শাসন চালাতে পারেন।
• বাংলা, মাদ্রাজ, বােম্বে, যুক্তপ্রদেশ, বিহার, আসাম, এবং প্রাদেশিক আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করা হয়।
• পৃথক নির্বাচনের নীতি শিখ, ইউরােপিয়ান ভারতীয়।খ্রীষ্টান, অ্যাংলাে ইন্ডিয়ান-এর প্রতি বর্ধিত করা হয়।
• দিল্লীতে প্রধান বিচারপতি এবং ছয়জন বিচারক সমন্বিত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত তৈরী করা হয়।
✍️দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
• 1937-এ ভারত শাসন আইন, 1935-এর বিধান অনুযায়ী নির্বাচন করা হয়।
• কংগ্রেসের মন্ত্রীদের ভারতের সাতটি প্রদেশে জয় লাভ করে।
• 1939-এর লা সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।
• ব্রিটিশ সরকার ভারতের জনগণের সাথে কোনরূপআলােচনা না করেই তাদের যুদ্ধে যুক্ত করেন।
• কংগ্রেস এর তীব্র বিরােধিতা করে।
• বিরােধিতার স্বরূপ কংগ্রেসের মন্ত্রীরা 12ই ডিসেম্বর, 1939-এ সাতটি প্রদেশ-এর সবকটি থেকেই ইস্তফা দেয়।
• মুসলিম লীগ 22শে ডিসেম্বর, 1939-তে মুক্তি দিবস হিসাবে পালন করে।
• 23শে মার্চ, 1940 মুসলিম লীগ পাকিস্তান তৈরীর দাবি করে (পাকিস্তান দিবস)
• যে পূর্বশর্তগুলি কংগ্রেসের দ্বারা স্থিরীকৃত হয়েছিল সেই সময়ে তা মেনে নিতে অস্বীকার করেন (গণপরিষদ গঠন কেন্দ্রে দায়িত্ববান সরকার গঠনের জন্য)। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার যারপর নাই ভাবে ভারতীয়দের সক্রিয় সহযােগিতা চেয়েছিলেন যুদ্ধে। এই সহযােগিতা সুনিশ্চিত করতেই 1942-এর মার্চ মাসে ক্যাবিনেট মন্ত্রী স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস-এর পরিচালিত একটি মিশন একটি ভারতে পাঠানাে হয়। আগস্ট প্রস্তাব এর আগে।
✓ পাকিস্তানের দাবী (23শে মার্চ, 1940)
• 1930 খ্রীষ্টাব্দে মহম্মদ ইকবাল প্রথমবারের জন্য সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধ, বেলুচিস্তান এবং কাশ্মীর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি মুসলিম প্রদেশ তৈরীর প্রস্তাব দেন। চৌধুরী রহমত আলি ‘পাকস্তান’ নামে নূতন শব্দ উদ্ভাবন করলেন (1933)।
• হিন্দুদের বশে মুসলিমদের স্বাধীন ভারতে থাকার একটি ভয় জিন্নান উপলব্ধি করলেন এবং তিনি পাকিস্তান সৃষ্টির দাবী করলেন।
• Pakistan Resolution (প্রস্তাব) মুসলিম লীগ প্রথম পাকিস্তান নামক পৃথক দেশের প্রস্তাব পাশ করলেন 1940-এর লাহাের অধিবেশন থেকে (জিন্নাহর দ্বিজাতি তত্ত্বও বলা হয়)। এটার খসড়া তৈরী করেছিলেন সিকন্দর হায়াত খান। ফজলুল হক উত্থাপন করেছিলেন এবং সমর্থন করেছিলেন কালিকুজামান। এটা ভারত শাসন আইন 1943-এর ডিসেম্বর মাসে করাচী অধিবেশন মুসলিম লীগ ‘বিভাজন এবং পরিত্যাগ’ (Divide and Quit)-এর শ্লোগান গ্রহণ করে।
✍️ আগস্ট ঘােষণা (1940)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের সহযােগিতা সুনিশ্চিত করার জন্য 1940-এর ৪ই আগস্ট একটি ঘােষণা করেন। যা আগস্ট ঘােষণা নামে পরিচিত। ভাইসরয় লিনলিথগাে যে প্রস্তাব দেন তাতে ছিল
• ডােমিনিয়ান স্ট্যাটাস ভারতীয়দের লক্ষ্য।
• বড়লাটের কার্যনির্বাহক সমিতির বৃদ্ধি এবং যুদ্ধের শেষে একটি গণপরিষদ গঠন করা হবে ভারতীয়দের নিয়ে তাদের সংবিধান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ধারণা অনুযায়ী স্থির করার জন্য।
• সরকার কৃতজ্ঞতার ঋণ হিসাবে প্রতিরক্ষা, সংখ্যালঘু ক্ষমতা, প্রদেশের সাথে চুক্তি, সর্বভারতীয় পরিষেবা সমস্ত পূর্ণ করবে।
• সংখ্যালঘুদের অনুমতি ছাড়া ভবিষ্যতে কোন সংবিধান মেনে নেওয়া হবে।
• আগস্ট ঘােষণায় ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া
• কংগ্রেস আগস্ট ঘােষণা বাতিল করল।
• ভারতবাসীর কাছে “ডােমিনিয়ান স্ট্যাটাস দরজার পেরেকের মত মৃত বস্তু” নেহেরু বললেন।
✍️ ব্যক্তিগত সত্যগ্রহ (অক্টোবর1940 ডিসেম্বর 1941)
• গান্ধীজী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয়দের নিযুক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহ শুরু করলেন।
• এটা সীমাবদ্ধ, প্রতীকী এবং অহিংস প্রকৃতির ছিল। • মহাত্মা গান্ধী সত্যাগ্রহীদের বেছে নিয়েছিলেন।
• ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহ শুরু করার উদ্দেশ্যগুলি ছিল
• জাতীয়তাবাদীদের ধৈর্য দুর্বলতার জন্য নয় এটা দেখানাে।
• মানুষের ভাবনার প্রকাশ যে তারা যুদ্ধে কোনরূপে আগ্রহী নয়, ভারতে চলতে থাকা স্বৈরতন্ত্র এবং নাৎসীবাদ এর মধ্যে তারা কোন পার্থক্য করতে পারে না।
• কংগ্রেসের দাবীগুলিকে শান্তিপূর্ণ ভাবে মেনে নেওয়ার আরাে একটি সুযােগ দান।
• সত্যাগ্রহীদের দাবী হবে বাক স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধ বিরােধী ঘােষণার মাধ্যমে।
• ত্যাগ্রহে দিল্লীর উদ্দেশ্যে যাত্রার কথাও বলা হয় যা ‘দিল্লী চলাে আন্দোলন’ নামে পরিচিত।
√গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
• আচার্য বিনােবা ভাবে প্রথম সত্যাগ্রহ শুরু করেছিলেন তাকে তিন মাসের কারাবাস দেওয়া হয়েছিল।
• জহরলাল নেহেরু দ্বিতীয় সত্যাগ্রহী যিনি চার মাসের জন্য বন্দী ছিলেন।
• ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহ প্রায় পনেরাে মাস চলেছিল।
No comments:
Post a Comment